ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্যান্টিনের খাবারের দাম ও মান নিয়ে অস্বস্তিতে বুটেক্স শিক্ষার্থীরা

প্রকাশনার সময়: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২২:০৫

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জাতির মস্তিষ্ক। যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমরা দেখি, সে বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ-তরুণীদের মেধার ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু সে তরুণদের গড়ে ওঠা কি ঠিকমতো হচ্ছে? শুধু র‌্যাগিং নয় মাদক, অনিরাপদ ও অস্বাস্থ্যকর ক্যান্টিন, বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট, মানহীন খাবার, কোর্স শিক্ষকদের দায়িত্বহীন আচরণ এবং নানা ধরনের বাজে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন পার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ফলে একরাশ হতাশা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হচ্ছে গ্র্যাজুয়েটরা।

এমনই এক চিত্র ফুটে উঠে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) একমাত্র ক্যান্টিনে। ইঞ্জিনিয়ারিং এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একজন শিক্ষার্থীকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবস্থান করতে হয়। সারাদিনের ব্যস্ততম সময় কাটিয়ে শরীরের পুষ্টি জোগান দিতে শরণাপন্ন হতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির একমাত্র ক্যান্টিনে। কিন্তু ইদানিং খাবারের উচ্চমূল্য এবং নিম্নমান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতির প্রায় ১৪ বছর পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খাবারে নেই কোন সু-ব্যবস্থা। প্রতিনিয়ত মানহীন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে অসুস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। উচ্চমূল্যের সঙ্গে খাবারের মান ও পরিমাণের অসামঞ্জস্যতায় জর্জরিত প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী। সম্প্রতি, খাবারের এমন অব্যবস্থাপনা নিয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল বিশাল বলেন, সারাদিন এখানে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে, ভালো খাবারের পরিবেশ না থাকলে তাদের জন্য বেস্ট আউটপুট দেয়াটা এক কথায় অসম্ভব। এখানকার শিক্ষার্থীরাই আমাদের আগামীর টেক্সটাইল সেক্টরের চালিকাশক্তি, তাদের যদি যত্ন না করা হয় এবং উপযুক্ত সিস্টেমে তাদের অভ্যস্ত না করতে পারলে এই অর্থনীতিতে তারা কিভাবে ভ্যালু এড করবে। দ্রুততম সময়ে এই ধরণের ক্যাটারিং সার্ভিসকে অব্যাহতি প্রদান করে একটা স্টান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম চালু করে নতুন ক্যাটারিং সার্ভিস চালু করতে হবে। এই অপারেটিং সিস্টেমের সকল নিয়ম কানুন ও দ্রব্যমূল্য শিক্ষার্থীদের দ্বারা মনোনীত করতে হবে।

শুরুতে ক্যান্টিনটির জায়গা স্বল্পতার কারণে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিলেও পরবর্তীতে স্থান পরিবর্তন করে একাডেমিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে অস্থায়ীভাবে ক্যাটারিংয়ের দায়িত্বে আছেন মো. কামরুল ইসলাম।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে ক্যান্টিন ম্যানেজার কামরুল ইসলাম জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে সামঞ্জস্যতা রাখতে গিয়ে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত পানি ও গ্যাসের সরবরাহ আমরা পাই না। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সম্পর্কে অবগত আছি ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই এসব সমস্যা সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নিবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. মো. রিয়াজুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের সাময়িক সমস্যার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই এ বিষয়টি মূল্যায়নে আনবো। নির্দিষ্ট পরিমাণে ভর্তুকি দেওয়ার পরেও খাবারের মূল্য বেশি রাখার কারণ দেখিনা, এ বিষয়ে ক্যান্টিন ম্যানেজারের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া হয়েছে। সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হলে তাদের বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ড. মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, নতুন ক্যান্টিনের কাজ এখনো চলমান। পরবর্তী সেমিস্টারে টেন্ডার বাজেটের মাধ্যমে ক্যান্টিনটি চালু করলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি। এছাড়াও বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নেই, কোনো শিক্ষার্থী চাইলে ক্যাটারিংয়ের দায়িত্ব নিতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরাও নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে এবং খাবারের মান ও বণ্টনেও স্বচ্ছতা আসবে বলে আশা করা যায়।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ