ঢাকা, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী তাসনিম হত্যার বিচার দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন

প্রকাশনার সময়: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৯

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী তাসনিম হত্যার বিচার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হয়।

নিহত তাসনিম জাহান আইরিনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ৯ অক্টোবর রাজধানীর আকাশ পরিবহনের ২টি বাসের রেষারেষিতে চাপা পড়ে নিহত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষার্থী। এ দুর্ঘটনায় তার বড় বোনও এখনো আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসারত আছেন বলে জানা যায়।

মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশের অন্যতম বড় সমস্যাগুলোর একটি। প্রতি বছরই সড়কে দুর্ঘটনার কারণে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়। সড়ক দুর্ঘটনার মৃত্যুহার অত্যন্ত উদ্বেগজনক, প্রতি বছর সড়কে ৭-৮ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। এর থেকে উত্তরণ ঘটা অত্যন্ত জরুরি কিন্তু কার্যকর কোন অগ্রগতি আমরা দেখতে পাইনি। যা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত শোকাবহ।

আমরা মনে করি, সময় এসেছে এই ভয়াবহ অবস্থার পরিবর্তন আনার। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি, যা সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা এবং মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সহায়ক হবে।

এসময় নিরাপদ সড়কের দাবিতে ৮টি দাবি তুলে ধরেন-

১. আইনের কঠোর প্রয়োগ: সড়ক পরিবহন আইনের সঠিক বাস্তবায়ন এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ট্রাফিক নিয়মের লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বর্তমান সড়ক নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে আরও কঠোর নিয়ম প্রয়োগ করতে হবে এবং দুর্নীতিগ্রস্ত বাস সিন্ডিকেট ও বাস মালিকদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

২. ড্রাইভারের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ: লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা যাচাইয়ের সুষ্ঠু প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। অনভিজ্ঞ চালকদের জন্য কঠোর নিয়মাবলী এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: পথচারী, চালক এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে ট্রাফিক নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা আবশ্যক। বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রচারণার মাধ্যমে সবাইকে নিরাপদ সড়ক ব্যবহারে উৎসাহিত করা প্রয়োজন।

৪. সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন: ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক এবং মোড়গুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর উন্নয়ন ও সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি। সড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে। বাংলাদেশে পৃথবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল রাস্তা তৈরি হয় কিন্তু কোয়ালিটিতে হয় সর্বনিম্ন। মানুষের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি রাস্তা যেন সত্যিকারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

৫. নিয়মিত যানবাহন পরীক্ষা: যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটি বা অব্যবস্থাপনা অনেক দুর্ঘটনার কারণ। সড়কে চলাচলকারী সব ধরনের যানবাহনের নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে সেগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৬. ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। লক্কর-ঝক্কর মার্কা ফিটনেসবিহীন বাস রাস্তায় চলাচল করতে দেয়া যাবে না। একটি বাস কোম্পানির মাধ্যমে চলাচল করলে কেউ কাউকে অযাচিত ওভারটেইক করবে না কিংবা রেষারেষি হবে না এতে তাসনীমের মত আর কাউকে জীবন দিতে হবে না।

৭.আকাশ ও ভিক্টর ক্লাসিকের লাইসেন্স ও রোড পারমিট অবিলম্বে বাতিল করতে হবে এবং অসাধু মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৮. নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য কঠোর ট্রাফিক আইন প্রয়োগের পাশাপাশি যথাযথ বাস স্টপ, স্পিড ব্রেকার, ট্রাফিক লাইট ও ফুটওভার ব্রিজ বাস্তবায়ন করতে হবে।

মানববন্ধনে শাবিপ্রবির এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের সভাপতি জনাব মাহফুজুল হক তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ গোলাম রাব্বি ও শাবিপ্রবির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ