ক্যাম্পাসে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে প্রশাসনের নির্দেশের তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কর্মসূচি ঘিরে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় সংগঠনের কর্মসূচি মোতাবেক শেকৃবি ছাত্রদলের মৌন মিছিল ও স্মরণসভা পালিত হয়। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন শেকৃবি ছাত্রদলের সভাপতি তাপস, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
তবে রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের এমন কর্মসূচি ঘিরে ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী তৌহিদ আহমেদ আশিক বলেন, শহিদদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। আন্দোলনের নয় দফার মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল ক্যাম্পাসকে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি মুক্ত করা। সেখানে শহিদ আবরারের মৃত্যুবার্ষিকীকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যারা অপরাজনীতি চালুর পাঁয়তারা করছে তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এ কাজে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ইন্ধনে অথবা কুচক্রী মহলের পাঁয়তারাই যে বা যারা যুক্ত হয়ে ক্যাম্পাসের আইন ভঙ্গ করেছে তাদেরকে প্রশাসনিক জবাবদিহি করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, রাজনীতি মানুষের মৌলিক অধিকার। ক্যাম্পাসে রাজনীতি কে বন্ধ করলো না করলো সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের প্রোগ্রামে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী ছিল। আমরা কাউকে জোর করে, পরীক্ষার হল কিংবা হল থেকে জোর করে কাউকে ধরে আনি নি। শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এখানে অংশগ্রহণ করেছে। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চালু থাকবে কিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবশ্যই, আমরা চাচ্ছি মুক্তচিন্তা চেতনায়, সুন্দর পরিবেশের, অস্ত্র ও চাঁদাবাজ মুক্ত রাজনীতি করার সুযোগ সবাই পাক। এটা আমরা একশোবার চাই, ব্যক্তিগতভাবে এবং সংগঠন থেকেও এটাই চায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অভিযোগ সাদা দল অর্থাৎ বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের পরামর্শ ও মৌখিক অনুমতিতেই রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ছাত্রদল এমন প্রোগ্রামের আয়োজন করতে পেরেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোন ধরনের সমর্থন তারা নেয়নি এবং আমি ব্যক্তিগতভাবেও বিষয়টি অবগত ছিলাম না। তাই এ অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
কর্মসূচি পালনে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হয়নি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবুল বাশার বলেন, আমরা যথাসম্ভব ক্যাম্পাসকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের পরিপন্থী হঠাৎ এ ধরনের রাজনৈতিক প্রোগ্রাম ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। আগামীকালই উপাচার্যের সাথে বিষয়টি নিয়ে বসব।
নয়াশতাব্দী/ইএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ