হঠাৎ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সকল আবাসিক হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহীদ শামসুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা মিছিল, স্লোগান নিয়ে হলের সামনে জড়ো হতে থাকেন। পরবর্তীতে তারা মিছিল নিয়ে শহীদ নাজমুল হক হল, শাহজালাল হল ও ঈশা খাঁ হলের সামনে গেলে ওই হলের কিছু শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলে তাদের সাথে যুক্ত হয়।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের রাস্তা দিয়ে যেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কে আর মার্কেটে অবস্থান করে স্লোগান দিতে থাকে। এসময় শিক্ষার্থীরা, ছাত্রলীগের চামড়া তুলে নিবো আমরা, ছাত্রলীগের দুইগালে জুতা মারো তালে তালে, এক দুই তিন চার ছাত্রলীগ হল ছাড়সহ নানা ধরনের প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন। মিছিলে বিভিন্ন হল থেকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের প্রথম বর্ষের শহীদ শামসুল হক হল ও ফজলুল হক হলের দুইজন ব্যাচমেট শিক্ষার্থীর মাঝে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে রেষারেষি চলছিলো। কিন্ত গতকাল রোববার মেসেঞ্জারের মেসেজে কথা কাটাকাটির জের ধরে পরবর্তীতে তারা আব্দুল জব্বার মোড়ে ওই সেই বিষয়ে কথা বললে পরিস্থিতির অবনতি হয় এবং দুইজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও এক পর্যায়ে মারামারি হয়। এসময় ফজলুল হক হলের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নিজের হলের জুনিয়রের পক্ষ নিয়ে শহীদ সামসুল হক হলের ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। ফজলুল হক হলের দ্বিতীয় বর্ষের ওই শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর হলের বেশ কিছু শিক্ষার্থী মিলে বাকৃবির সব হল থেকে ছাত্রলীগমুক্ত করার জন্য বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
ভুক্তভোগী শহীদ শামসুল হক হলের ওই শিক্ষার্থী বলেন, ফজলুল হক হলে আমার ক্লাসমেট বন্ধুর সাথে একটু রেষারেষি হলে আমি আমাদের ব্যাচের গ্রুপে আর কথা না বাড়িয়ে তাকে নিয়ে আব্দুল জব্বার মোড়ে নিয়ে এসে বোঝানোর চেষ্টা করি। এসময় ফজলুল হক হলের দ্বিতীয় বর্ষের অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আমার হলের জুনিয়রকে মারছিস বলে আমার গায়ে হাত তুলেন।
ফজলুল হক হলের অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী বলেন, আব্দুল জব্বার মোড়ে দেখি আমার হলের জুনিয়রকে ওই ছেলে চড় মারছে। এসময় ঘটনা কি হয়ছে জানতে চাইলে আমাকেও গালি দেয় এবং চড়াও হয়। তাই আত্মরক্ষার স্বার্থে যা করার করি। দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমি ছাত্রলীগের সাথে জড়ালোভাবে যুক্ত ছিলাম না।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড মো. আব্দুল আলীম বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো শুনেছি। গণতদন্ত কমিটি গঠন শেষ হয়েছে, দ্রুতই তারা কাজ শুরু করবে। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যারা শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন, নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিল বা এখনো জড়িত আছে, তারা কোনোভাবেই হলে থাকতে পারবে না। তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ