রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ক্লাস শুরুর পর ১০ মাস পার হলেও হয়নি সেমিস্টার পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের দাবি, এতে ভয়াবহ সেশনজটের কবলে পড়েছেন তারা। বিভাগে কয়েক দফা দাবি জানলেও শুধু আশ্বাস ছাড়া আর কিছু মেলেনি। ফলে, সেশনজট নিরসন, চার মাসে সেমিস্টারসহ ৪ দফা দাবিতে বিভাগে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে চার দফা নিয়ে কথা বলেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা, 'পরীক্ষা কেন ধীরগতি, কি করছেন সভাপতি', 'রেজাল্ট কেন দশ মাসে, রেজাল্ট চাই এক মাসে', 'দুই বছরে দুই সেমিস্টার, ধিক্কার ধিক্কার', 'শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা, রুখে দাও, গুড়িয়ে দাও', '১২ মাসে সেমিস্টার, চলবে না চলবে না', 'পরিবারের নামে প্রতারণা চলবে না, চলবে না', 'মিষ্টি কথা বাদ দেন, আমাদের ছেড়ে দেন', 'আমরা কেন আদু ভাই, জবাব চাই জবাব চাই'সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো-
২। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের দশ মাস ক্লাসের পরেও পরীক্ষার ফর্ম-ফিলাপের তারিখ দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে ফর্ম-ফিলাপের তারিখসহ পরীক্ষার রুটিন দিতে হবে।
৩। অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের তদন্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা এবং পাশাপাশি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে কি ধরণের সহযোগিতা করা হয়েছে তা শিক্ষার্থীদের জানানো।
৪। বিভাগে সেশনজট নিরসনে চার মাসে সেমিস্টার শেষ করা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাস শুরু পর প্রায় ১০ মাস পার হলেও এখনো সেমিস্টার পরীক্ষা হয়নি। প্রত্যেক বর্ষের শিক্ষার্থী ভয়াবহ সেশনজটে পড়েছে৷ বিভাগে কয়েক দফা আলোচনা করলেও তারা শুধু আশ্বাসই দিয়ে গেছেন। কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তাই সব সেমিস্টারে এখন থেকে পরীক্ষাসহ চার মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। অর্থাৎ এক বছরে তিন সেমিস্টার যাতে শেষ হয় সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইনসান আলী বলেন, আমাদের দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হয়েছে প্রায় ১০ হবে। এখনো সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হলো না। এমনকি ফরম ফিলআপও শুরু হয়নি। বিভাগের নতুন চেয়ারম্যানের মেয়াদ প্রায় ৩ মাস। শুরু থেকেই তার কাছে পরীক্ষার বিষয় নিয়ে বার বার গিয়েছি। আলাদা আলাদাভাবে এবং দলগতভাবে আলোচনা করেছি। তিনি শুধু ধৈর্য ধরার কথা বলে কালক্ষেপণ করেছে। এখন যতদ্রুত সম্ভব পরীক্ষা শুরু হোক।
বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শেখ ফাহিম আহমেদ বলেন, আমরা চাই না ছোট ভাই-বোনেরা আর আমাদের মতো সেশনজোটের মতো মানসিক যন্ত্রণায় থাকুক। কতটা ধীরগতি হলে একটা সেমিস্টার শেষ করতে ১২ মাস লেগে যায়। আমরা চার দফা দাবিতে আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। গত ২২ সেপ্টেম্বর বিভাগের সভাপতি বরাবর চার দফা পেশ করে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেই। এই চার দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় আমরা বিভাগে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।
এর আগে, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিভাগের সভাপতির কাছে চার দফা দাবি দিয়ে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় আজকের এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ