শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গণপিটুনিতে নিহত

প্রকাশনার সময়: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:৩৩

গণপিটুনিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেট থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে শামীম মোল্লাকে আটক করে শিক্ষার্থীরা।

এ সময় প্রাথমিক পর্যায়ে মারধর করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেন শিক্ষার্থীরা।

পড়ে নিরাপত্তা শাখায় শিক্ষার্থীদের রোষের মুখে ফের দুই দফায় গনধোলাইয়ের শিকার হন শামীম। এতে গুরুতর আহত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লা।

ওই রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে তাকে রাতেই স্থানীয় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৫ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।

শামীম আহমেদ শামীম মোল্লা (৩৪) আশুলিয়ার আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া মোল্লাবাড়ী এলাকার ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে।

এদিকে বিচারবহির্ভূত এ মৃত্যুতে প্রতিবাদ জানিয়েছন জাবি শিক্ষার্থীরা। ওই রাতেই করেছেন বিক্ষোভ মিছিল। এ মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের আইনি ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছন পুলিশ প্রশাসন।

এ ধরনের বিচারবহির্ভূত মারধরের ফলে শামীমের মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে আজো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জাবি সমন্বয়করা। যে কোনো অপরাধের জন্য আইনের শাষণ প্রতিষ্ঠার দাবি তাদের।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, গতকাল প্রান্তিকে আমাদের কিছু সাধারণ ছাত্ররা তাকে দেখতে পায়, এবং উত্তেজিত হয়ে তাকে মারধর করে একপর্যায়ে তাকে প্রক্টর অফিসে ধরে আনা হয়, সেখানে তাকে রাখা হয়। আমরা দেখেছি, তালা ভেঙে অতিউৎসাহি কিছু শিক্ষার্থী তাকে বেধরক পিটুনি দেয়, এবং তৃতীয় দফায় তাকে আরো পেটানো হয়। একটা পর্যায়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন সেখানে আসে আমাদের উপচার্যসহ সেখানে সবাই ছিল। তখন পুলিশের কাছে তাকে তুলে দেওয়া হয়।পুলিশ নিরাপত্তায় তাকে যখন গাড়িতে উঠানো হয় তখনো অতি উৎসাহী কিছু শিক্ষার্থীরা তকে পেটাচ্ছিল, গালি দিচ্ছিল এবং স্লোগান দিচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের কাছে আমাদের দাবি। যারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে অতিসত্তর এ ঘটনার সঙ্গে জরিতদের ছবি আছে ফুটেজ আছে তাদের চিহ্নিত করে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। দেশে আদালত আছে আইনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, বিকালে খবর পেয়ে নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে ৩৯ ব্যাচের সাবেক ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। পরে তার সঙ্গে কথাবার্তা বলে আগের মামলায় তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, আমাদের এখানে যখন আনা হয় তখন আমরা পরীক্ষা করে দেখি তিনি মৃত। তার শরীরে সেরকম গুরুতর কোনো ক্ষত পাওয়া যায়নি৷

আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আমাদের একটি টিম পাঠাতে বলা হয়। পৌনে ৯টার দিকে মারধরের শিকার এক যুবককে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। প্রাথমিকভাবে মারধরের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ