জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় লাইব্রেরির জামানত হিসেবে দেয়া ৫০০ টাকা ফেরত পেতে সোনালী ব্যাংক শাখায় নিজ নামে একাউন্ড থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের। অন্য ব্যাংক একাউন্ট থাকলেও উত্তোলন করা যাচ্ছে না জামানতের এই অর্থ। ক্যাম্পাস থেকে বিদায় বেলায় বয়স ২৩ বছরের বেশি থাকায় সোনালী ব্যাংকে অনেকে করতে পারছেন না স্টুডেন্ট একাউন্ট। অন্যদিকে সঞ্চয়ী একাউন্ট খুললে একাউন্টে স্থিতি হিসেবে জমা রাখতে হয় ১১০০ টাকা। এ যেন ৫০০ টাকা তুলে ১১০০ টাকা জামানত রাখারই নামান্তর।
এ ছাড়া টাকা উত্তোলনের আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হয় ভর্তি ফি প্রদানের মূল রশিদ। আবেদনের পর টাকা ফিরে পেতেও লাগে দীর্ঘ সময়। এটিকে খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি বললেও ভুল হবে না। তাই অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে জামানতের ৫০০ টাকা রেখেই ছাড়েন ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের ছেড়ে যাওয়া এই টাকা বিভিন্নভাবে অপব্যবহার হয় বলে জানা গেছে। কার পকেটে ঢুকছে সেই টাকা?- প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, আগে চেক সিস্টেমে এই টাকা শিক্ষার্থীদেরকে ফেরত দেওয়া হতো। তবে শিক্ষার্থীদের সেই টাকা চেকের মাধ্যমে তুলে নিতো অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থ দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. তারিকুল ইসলাম সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরকে সোনালি ব্যাংক একাউন্ট ব্যতীত শিক্ষার্থীদেরকে টাকা ফেরত না দেওয়ার প্রস্তাব জানান। পরে উপাচার্য ৫ জুন ২০২৪ থেকে সোনালি ব্যাংক একাউন্ট ব্যতীত জামানতের টাকা ফেরত দেওয়া হবে না বলে লিখিত আদেশ জারি করেন। এতে অন্য ব্যাংক একাউন্ট থাকলেও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
জামানতের ৫০০ টাকা তুললে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়া শিক্ষার্থী মো. ইমরান হোসেন বলেন, আমি স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ (স্নাতক) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। জামানতের ৫০০ টাকা তুলতে গেলে তারা সোনালী ব্যাংক একাউন্ট ব্যতীত টাকা ফেরত দিতে পারবেন না বলে জানান। জামানতের টাকা ব্যাংক একাউন্টে ফেরত দেবে ভালো কথা। কিন্তু সেটা শুধু সোনালী ব্যাংকেই কেনো হতে হবে? বয়সের কারণে আমি সোনালী ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট করতে পারছি না। সঞ্চয়ী একাউন্ট খুললে ১১০০ টাকা স্থিতি রাখতে হচ্ছে। এই রকম নিয়ম বাতিল চাই৷ শিক্ষার্থীদের কাছে ৫০০ টাকার মূল্য অনেক। যেকোনো ব্যাংক একাউন্টে টাকা নেওয়া যাবে সেই ব্যবস্থা করুক৷
এসম্পর্কে প্রফেসর ড. তারিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে ৫০০ টাকা খুবই সামান্য। অনেক শিক্ষার্থী এই টাকা উত্তোলন করেন না। এ ছাড়া ব্যাংক একাউন্ট তো কোনো না কোনো সময় কাজে লাগবেই। আগে করলেই বা সমস্যা কি? আগে চেক দেওয়া হলেও বর্তমানে একাউন্ট ছাড়া টাকা দেওয়া হচ্ছে না। সকল শিক্ষার্থীদের ব্যাংক একাউন্ট থাকা দরকার। এজন্যই আমার প্রস্তাবে সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর এই আদেশ জারি করেন। এতে টাকার অপব্যবহার কমবে। শিক্ষার্থীদের ছেড়ে যাওয়া টাকা কেউ পকেটে নেয় না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলেই জমা হয়। তবে এখন যেহেতু অভিযোগ আসছে কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে যদি অভিযোগ জানায় তাহলে আমরা চেকের মাধ্যমেও টাকা ফেরত দেবো।
টাকা পেতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২/১ জনের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়। উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষের অনুমতির প্রয়োজন হয়। একজনের জন্য অর্থ উত্তোলনের ফাইল রেডি করা একটু ঝামেলার। কয়েকজন মিলে আবেদন করলে আমরা ফাইল রেডি করি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ