আকস্মিক বন্যায় দেশে বিপুল সংখ্যক ফসলাদি নষ্ট হয়ছে। যার কারণে বড় ধরনের খাদ্যসংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেশের এ সংকট মোকাবিলার উদ্দেশ্য কৃষি এবং কৃষককে বাঁচাতে ত্রাণ সরবরাহের পাশাপাশি বিনা মূল্যে ধানের চারা এবং সবজির বীজ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা।
এ উদ্যোগকে সফল করতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (DAE) সহায়তায় বীজ সংগ্রহ ও বিশ্ববিদ্যালের গবেষণা মাঠে ধানের চারা উৎপাদন করার জন্য বীজতলা তৈরির কাজ পুরোদমে শুরু করে দিয়েছে। তাছাড়া সবজি ফসলের চারা উৎপাদনের কাজ ও এগিয়ে চলছে। পুরাতন বাণিজ্য মেলায় মাঠে ব্যাপক আকারে বিভিন্ন সবজির চারা উৎপাদন করা হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং অন্যতম সমন্বয়ক আল রাকিব বলেন, কৃষি অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। তাই বন্যায় কৃষি সেক্টরের ক্ষতিকে পুষিয়ে নিতে শেকৃবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ধান চাষ এবং কিউকারবিট রোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)-এর সহায়তায় বন্যাকবলিত এলাকার জন্য উপযোগী ধান ব্রি-২৩,ব্রি-৭৫ এবং বিনা-১৭ ভ্যারাইটির ধানের বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এগ্রোনমি ফিল্ডে চার বিঘা জমিতে বীজ বপন করে চারা উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। পরবর্তীতে রবি সিজনকে সামনে রেখে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে সবজি জাতীয় চারা উৎপাদন বাস্তবায়ন করা হবে। আমাদের সবার সম্মিলিত উদ্যোগে একটি সুখী,সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব।'
এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়। আশা করি, তাদের এ উদ্যোগ বন্যা পরবর্তী সময়ে খাদ্য সংকট মোকাবিলায় অনেকাংশে ভূমিকা রাখবে। আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই। তিনি বলেন, কিউকারবিটস (সবজি, টমেটু, বেগুন ইত্যাদি) যেহেতু রবি সিজনের ফলন তাই সবজি এখনি লাগানো হচ্ছে না। রবি সিজনকে সামনে রেখে তা বাস্তবায়ন করা হবে এবং কৃষকদের মধ্যে বীজ সরবরাহ করা হবে।
এগ্রোনমি বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের মহৎ উদ্যোগ খাদ্যসংকট মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করি। তা বাস্তবায়নে শিক্ষকরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। ইতোমধ্যে আমাদের সাথে শিক্ষার্থীরা বন্যা কবলিত এলাকায় ধান রোপনের বিষয়ে পরামর্শ করতে আসলে আমরা শিক্ষকরা মিলে BRRI এবং BADC-তে ধান বীজের জন্য যোগাযোগ করি এবং বিএডিসি থেকে আমরা ৩০০ কেজির মতো ধান বীজ পায়। প্রায় চার বিঘা জমিতে বীজগুলো বপনের প্রকিয়া চলমান।আমরা বিএডিসি থেকে আরও ধান বীজ পাওয়ার জন্য যোগাযোগ রাখতেছি
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ