পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) বহিঃস্থ বাবুগঞ্জ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের জন্য বাসের ভোগান্তি যেন এক অনন্ত যন্ত্রণা। বহুদিন ধরে চলছে একটি ভাঙা বাসই, তাও যেন তার সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
ধূসর রং চটে যাওয়া নীল বাসটি ধুঁকে ধুঁকে চলে, যেন প্রতিটি মাইল অতিক্রম করতে তার প্রাণপণ চেষ্টা করতে হয়। নড়বড়ে লাইটগুলো কখন যে নিভে যায়, তার কোনো ঠিক নেই। বাসের দরজাও কোনোরকমে আটকানো যায়, তবে যেকোনো মুহূর্তে খুলে যেতে পারে। এই ভাঙা বাসেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে শহরে আসা-যাওয়া করেন, প্রতিদিনের যাত্রায় সঙ্গী এক অজানা অভিজ্ঞতা। তাদের এই যাত্রা যেন এক অবিরাম সংগ্রাম, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপে রয়েছে অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকি।
ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন ডিসিপ্লিনের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আলি হোসাইন রনি বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা যে সকল সুবিধা পেয়ে থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হলো পরিবহন ব্যবস্থা। কিন্তু যখন সেই পরিবহন ব্যবস্থা ৬০০ শিক্ষার্থীর শুধু একটি মাত্র ২৩ সিট এর ফিটনেসবিহীন ভাঙা মিনি বাস দিয়ে নিজেদের দায়সারা করে, শিক্ষার্থীদের মনে তা সৃষ্টি করে ক্ষোভ এবং হতাশা।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় রাস্তায় চলন্ত অবস্থায় নষ্ট হয়ে যায় এই বাস, যা বিপাকে ফেলে শিক্ষার্থীদের। এমতাবস্থায় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অতিদ্রুত নতুন বাস না দেওয়া হলে আমরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করবো।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশাসনের ক্ষমতা নাই ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা দেয়ার, কিছু বললে আবার যা আছে সেটাও বন্ধ করে দেয়া হয়। এত অবহেলা নিয়ে একটা বহিস্থ ক্যাম্পাস খুলে রাখার কি দরকার, ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ সুবিধা না দিতে পারলে ক্যাম্পাস টাই বন্ধ করে দেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পরিচালক অধ্যাপক জামাল হোসেন বলেন, ‘আমি সবেমাত্র দায়িত্ব পেয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থা যেন নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয়, সে ব্যাপারে আমার সদিচ্ছা আছে। বাবুগঞ্জ ক্যাম্পাসের যাতায়াতে যে সংকট সে বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব, পাশাপাশি নতুন গাড়ি ক্রয়েরও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট দাবিসমূহ প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ