মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

শাবিপ্রবি প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা, পদত্যাগ না করলে আইনি ব্যবস্থা

প্রকাশনার সময়: ১১ আগস্ট ২০২৪, ১৭:৫২

উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টরিয়াল ও প্রভোস্ট বডির পদত্যাগে নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সেজনজটের পাশাপাশি একাডেমিক সনদপত্র উত্তালনে ভোগ পোহাতে হচ্ছে চাকরি প্রত্যাশীদের।

এদিকে, আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে এখনো যারা পদত্যাগ করেননি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দল।

জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের পর স্বপদ থেকে অব্যাহতি নেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কবির হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন।

এ ছাড়া ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়ার পর একইদিন গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন এবং মেডিকেল প্রশাসক অধ্যাপক ড. আসিফ ইকবাল পদত্যাগ করেন বলে জানায় রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান।

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পদত্যাগের জন্য প্রশাসনিক পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল শিক্ষকদের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। এতে প্রক্টরিয়াল ও প্রভোস্ট বডির সদস্যরা ছাড়া বাকিরা পদত্যাগ না করলে তাদেরকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তাদের কার্যালয়ে তালা দেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের ঘোষিত আলটিমেটামে অবাঞ্ছিত হওয়ার পরও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান, কৃষি ও খনিজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবু সাইয়েদ আরেফিন খান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. লায়লা আশরাফুন, বঙ্গবন্ধু গবেষণা সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল গণি, আইআইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম, শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আলমগীর কবিরসহ সমিতির বাকি সদস্যরা ও মহাবিদ্যালয় পরিদর্শক তাজিম উদ্দিন এখনো পদত্যাগ করেননি। পদত্যাগ না করায় তাদেরকে গত বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট) সমন্বয়ক দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্লজ্জ বলে মন্তব্য করা হয়।

প্রশাসনিক কার্যক্রমের স্থবিরতা নিয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ গঠনে স্বৈরাচার সমর্থকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদ থেকে সরে দাঁড়ানো সময়ের দাবি ছিল। কিন্তু এই দাবি পূরণের ফলে দেখা দিয়েছে আমাদের একাডেমিক জীবনে সেজনজটের শঙ্কা। গত জুন-জুলাই আমাদের বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশব্যাপী উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে তা আর হল না। এতে একাডেমিক পড়াশোনা না এগোলেও এগোচ্ছে বয়স। একাডেমিকসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে পড়তে হচ্ছে দুঃশ্চিন্তা।

এই সংকটাপন্ন পরিস্থিতি উত্তরণের বিষয়ে শাবিপ্রবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ফাহিম শাকিল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি থাকবে, অতিসত্বর যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া। একইসঙ্গে আরেকটা জোর দাবি হচ্ছে প্রশাসনিক পর্যায়ে এমন কোন ফ্যাসিস্টকে নিয়োগ না দেয়, যারা আবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, যারা শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলো; আমরা তাদের দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে বলেছিলাম। এখনো যারা পদত্যাগ করেনি তাদের আমরা ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি এবং তাদের বিরুদ্ধে দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সমন্বয়ক আরও বলেন, আমরা মামলার প্রস্তুতি গ্রহণ করছি, খুব শীগ্রই জড়িত শিক্ষকসহ সকলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ