ঢাকা, রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাবিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান, ৪ ঘণ্টা পর অবমুক্ত উপাচার্য

প্রকাশনার সময়: ১৭ জুলাই ২০২৪, ২১:২৯

কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের অবমুক্ত করতে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বুধবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে এ অভিযান শুরু করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। উদ্ধার অভিযানে পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাবের সদস্যেরা যৌথভাবে অংশ নেন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তাদের প্রশাসন ভবনের পিছনে ও বঙ্গবন্ধু হলের দিকে অবস্থান নিয়ে কিছু ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। তবে তারা বেশিক্ষণ অবস্থান নিতে না পেরে পালিয়ে যান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই উপাচার্যকে প্রশাসন ভবন থেকে বের করে নিয়ে আসেন তারা।

অবমুক্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমার‌ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আমরা অনেক ধৈর্য ধরে তাদের সাথে ৩ বার বসেছি। তাদের কথা শুনেছি। তারা আমাদের কথা শুরুতে শুনেছিল, এর কিছুক্ষণ পর তারা আমাদের জানালো, বিষয়টি আর আমাদের হাতে নেই, বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে। আমার শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে এখানে ছিল না। সবশেষে বহিরাগতরা এখানে রাজনৈতিক পরিবেশ ঘোলা করতে এসেছিল। হলে যারা থাকবে বা চলে যাবে আজকের জন্য তাদের সব দায়িত্ব আমরা নিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে অনুপ্রবেশকারীরা প্রবেশ করে আমাদের পানি ও বৈদ্যুতিক লাইন বন্ধ করে দিল। ফলে আমরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি।

উপাচার্য আরও বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার পর আমরা পুলিশ প্রশাসনকে কল করেছি। তারা আমাদের উদ্ধার করেছে। আজকে যারা হলে থাকবে, তাদের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করবো। ক্যাম্পাসের পুরো দায়িত্ব এখন প্রশাসনের হাতে, আমরা তাদের নির্দেশে চলবো।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের নির্দেশনা দেওয়ার পর আমরা ক্যাম্পাসে এসে সন্ধ্যা সাতটা থেকে আধা ঘণ্টাব্যাপী একটি উদ্ধার অভিযান চালিয়েছি। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবিষ্যতে প্রশাসন সহযোগিতা চাইলে আমরা সাহায্য করবো।

এর আগে, আজ দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে হবিবুর রহমান মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লিখিতভাবে পাঁচ দফা দাবি জানান তারা।

দুপুর দুইটার মধ্যে এসব দাবির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে দাবি জানান তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা দীর্ঘ আলোচনা শেষে বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়েন। একপর্যায়ে প্রশাসন ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের জন্য নেওয়া খাবারও ছিনিয়ে নেয় আন্দোলনকারীরা। পরে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে শিক্ষার্থীদের দশজন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনকারীরা প্রশাসন ভবনের ফটক তালা দিয়ে ঘেরাও করে রাখেন। এতে উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ভিতরেই আটকা পড়েন। এ সময় আন্দোলনকারীরা প্রশাসন ভবনের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

ফটকে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে উদ্দেশ্যে করে 'ভুয়া', 'ভুয়া', 'দালাল', 'দালাল' স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ