কোটা সংষ্কার আন্দোলনে সারা বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিক্ষোভ মিছিল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটের সামনে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুর ২টায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুস ক্যান্টিন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে হল চত্বর, লেকপাড়, শেখ হাসিনা চত্বর হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন মেনগেটের সামনে প্রশাসনের নিষেধ সত্ত্বেও দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা যাবত রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
রাস্তা অবরোধ চলাকালে পুলিশ শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী আজ গোপালগঞ্জ আসবেন। আগামীকালও থাকবেন। তাই আজ আর কাল ক্যাম্পাসের বাইরে আন্দোলন না করতে। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সারা বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা যে সুরে কথা বলে আমরাও সেই সুরে কথা বলব।
অবস্থান কর্মসূচিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, প্রধান বিচারপতি কোটায় নিয়োগ হয়েছেন। আজকে যদি প্রধান বিচারপতি কোটায় নিয়োগ না হতো তাহলে ওই জায়গায় মেধার ভিত্তিতে একজন যোগ্য লোক যাইতো। আর যদি প্রধান বিচারপতি যোগ্য হইতো, আজকে বাংলার শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের জন্য রাস্তায় আন্দোলন করতে হতো না।
অবস্থান কর্মসূচিতে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শান্ত বলেন,"বর্তমান কোটা ব্যবস্থা বাংলাদেশের মধ্যে কোটার খামার তৈরি করতে চাচ্ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, সাধারণ ছাত্র কোটার খামার করতে দেব না। আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো, কোটার খামার তছনছ করে দিয়ে সর্বত্র মেধার জায়গা করে দেবো।"
এছাড়াও আন্দোলনে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওমর শরীফ বলেন," আপনাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমাদের সঙ্গে যে বৈষম্যমূলক যে আচরণ তার বিরুদ্ধে আপনারা আন্দোলনে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী আসতে পারেনি। তা না হলে আন্দোলন আরও বেগবান হত। বর্তমান যে প্রধান বিচারপতি তিনি নিজে কোটায় নিয়োগ প্রাপ্ত। যিনি আপিল করেছেন তিনিও কোটায় নিয়োগ প্রাপ্ত। আপিল বিভাগের বেঞ্চ প্রাকটিস কি, যদি একটা রায় হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার পিআর অর্ডার দিয়ে হ্যান্ডওভার করা হয় পিল বিভাগের কাছে। কিন্তু উনি কি করেছে, পিয়ার অর্ডার ছাড়াই হ্যান্ডওভার করেছে । যাতে মামলা আরও পাঁচ বছর ধরে চলে, আমরা পাঁচ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকবো। এটা মেধার বৈষম্যের যে কুফল তার জলন্ত উদাহরণ "
তিনি আরও বলেন," আমাদের এই আন্দোলন চলছে চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের দাবি কার্যকর করা হবে। "
এছাড়া কোটা সংষ্কারের দাবিতে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আগামীকাল (৬ জুলাই) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুস ক্যান্টিনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বশেমুরবিপ্রবি সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ