ঢাকা, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জিলহজ ১৪৪৫

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ

প্রকাশনার সময়: ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭:০০ | আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭:০২

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এর আগে গতকাল রোববার ও ৬ জুন কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে একই কর্মসূচি পালন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এর মধ্যে ছিল 'মেধাবীদের কান্না আর না আর না', 'কোটাবৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক', 'কোটা প্রথায় নিয়োগ পেলে দুর্নীতি বাড়ে প্রশাসনে', 'মেধাবীদের যাচাই করো কোটা পদ্ধতি বাতিল করো', '১৮ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার', 'দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান', 'কোটা বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক' ইত্যাদি। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বড় ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল। সেই আন্দোলনের জেরে এক পরিপত্রের মাধ্যমে কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটার অংশটি বাতিল করেন উচ্চ আদালত। এরপর থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হয়েছে। এবার তাদের আন্দোলন একেবারে কোটা বাতিলের দাবিতে নয়। তারা চান সরকারি চাকরিতে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা থাকুক। এছাড়া কোটা সুবিধা ভোগকারী কোন ব্যক্তি যেন জীবনে শুধুমাত্র একটি ক্ষেত্রে কোটা সুবিধা নিতে পারেন সেই দাবিও জানান তারা।

মানববন্ধনে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, কোটা সম্পূর্ণ বাতিল হোক, সেটি আমাদের দাবি নয়। এদেশের স্বাধীনতায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অতুলনীয়। তবে তাই বলে তাদের জন্য বৃহৎ পরিমাণ কোটা রাখার কোনো মানে হয় না। একজন কোটাধারী একাধিকবার কোটা সুবিধা ভোগ

করায় কোটাবিহীন শিক্ষার্থীরা সর্বক্ষেত্রেই তাদের থেকে পিছিয়ে থাকে। আমরা কোটা বাতিল চাই না, কোটা পদ্ধতির সংস্কার চাই। চাকরিতে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হোক। সেই সঙ্গে কোটা সুবিধা ভোগকারী কোন ব্যক্তি যেন জীবনে যেকোনো একটি ক্ষেত্রে কোটার সুবিধা নিতে পারেন।

স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও সাম্য প্রতিষ্ঠা হয়নি। আমাদের দেশে একজন কোটাধারী শিক্ষার্থী তার জীবদ্দশায় একাধিকবার কোটার সুবিধা পান। এই পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।

কর্মসূচিতে সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া মুহিব। এসময় বিভিন্ন বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ৫ জুন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। ওই দিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।

এ অবস্থায় আদালতের ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ