ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক স্থানীয়করণ কর্মশালার সমাপনী

প্রকাশনার সময়: ১২ জুন ২০২৪, ২১:১৭

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)-এর আয়োজনে ময়মনসিংহ শহরের শম্ভুগঞ্জে অবস্থিত ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে বুধবার (১২ জুন) শেষ হলো তিন দিনব্যাপী নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা-বিষয়ক স্থানীয়করণ কর্মশালা।

বাংলাদেশের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে অবদান রাখতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ সংগঠন ও স্থানীয় প্রতিনিধি এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন। কর্মশালাটি বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করেছে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব উইমেন পিসবিল্ডারস (জিএনডব্লিউপি)।

বুধবার বিকেল ৪টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপিএস-এর পরিচালক শাহনাজ সুমি, জিএনডব্লিউপি-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেসমিন নারিও গ্যালাসি, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার বিয়ানকা পাবোটয় ও বাংলাদেশের কো-অর্ডিনেটর পাহিমা আহমেদ এবং বিএনপিএস-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নাসরিন বেগম।

বিএনপিএস-এর পরিচয় ও কার্যক্রম সম্পর্কে বিএনপিএস-এর পরিচালক শাহনাজ সুমি বলেন, নারীর সমতা রক্ষা, বৈষ্ণম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা, তৃণমূল নারী সংগঠনের বিকাশ এবং জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে নারীর অবদান তুলে ধরতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিএনপিএস। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বৈষ্ণম্যহীনতা, বৈচিত্র্য ও ধর্মনিরপেক্ষতার মূলমন্ত্র নিয়ে কাজ করছে। যা বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের অনেক নেটওয়ার্ক ও ফোরামের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএনপিএস নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক স্থানীয়করণ কর্মশালার আয়োজন করেছে।

কর্মশালা সম্পর্কে তিনি বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১৩২৫ রেজ্যুলেশনে (ইউএনএসসিআর-১৩২৫) বলা হয়, কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতি বা সংকটময় (প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট) পরিস্থিতিতে নারীরা সহিংসতার শিকার হন। নারীই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হন। আবার সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে এই নারীর অবদানই বেশি থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, নারীর এসব অবদান তেমনভাবে স্বীকৃতি পায় না। এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে নারীদের কীভাবে বের করে আনা যায়- এরই পেক্ষিতে ২০০০ সালে তৈরি করা হয় ইউএনএসসিআর-১৩২৫ রেজ্যুলেশন।

মূলত এ রেজ্যুলেশনকে ঘিরেই বাংলাদেশ সরকার নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সবাইকে নিজ অবস্থান থেকে নারী ও শিশু নিরাপত্তায় কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

নারী-পুরুষের সমতা ও সমানভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জিএনডব্লিউপি-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেসমিন নারিও গ্যালাসি।

তিনি বলেন, এই কর্মশালা নিয়ে আমাদের উচ্চাকাক্সক্ষা ছিল। আমরা নারী, মানবাধিকার, রোহিঙ্গা ইস্যু ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নিয়ে কথা বলেছি। আমরা চাইলে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে অসমতা, বৈষ্ণম্য ও অনিরাপত্তা রূখে দিতে পারি। কর্মশালায় বিভিন্ন গ্রুপগুলো নারীর প্রতি সহিংসতা, কিশোর অপরাধ, মাদক, বাল্যবিবাহ, জঙ্গীবাদ, যৌন হয়রানি, পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। সকল কর্মসূচি ও দায়িত্বে নারী যাতে নির্বিঘ্নে অংশ নিতে পারেন সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

কর্মশালার পরিচিতি, উদ্দেশ্য, প্রত্যাশা ও পরিকল্পনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপিএস-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নাসরিন বেগম।

কর্মশালাটি আয়োজনের গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে ময়মনসিংহ (সদর ও ত্রিশাল উপজেলা) ও নেত্রকোনা জেলায় (সদর ও বারহাট্টা উপজেলা) ৪টি স্টেয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৯ মাস এসব কমিটি নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে কাজ করবে। যা মূলত স্থানীয়করণের মাধ্যমে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে বাংলাদেশের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অবদান রাখবে।

প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শারমীন জাহান শাম্মী বলেন, নারী ও শিশু বিষয়ক কর্মী হিসেবে কর্মশালাটি আমার জন্য বেশ কার্যকর হয়েছে। কর্মশালায় অর্জিত তথ্য ও জ্ঞানের মাধ্যমে আমি আরো বেশি কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবো। উপজেলা ভিত্তিক স্টিয়ারিং কমিটির একজন সদস্য হওয়ায় অর্পিত দায়িত্বগুলো আরো কার্যকরভাবে করতে পারবো। এই কমিটির হাত ধরে নারী ও শিশুদের সার্বিক নিরাপত্তায় আমি আরো অনেক কাজ করতে চাই। এ ছাড়া আইনের দিক থেকেও নারী ও শিশুদের নির্যাতন রোধে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে চাই।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ