ঢাকা, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জিলহজ ১৪৪৫

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শেকৃবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

প্রকাশনার সময়: ০৬ জুন ২০২৪, ২০:৫৩

‘কোটা বৈষম্য দূর কর, নইলে বুকে গুলি কর’, ‘আমার দেশ আমার মা, বৈষম্য মানি না’ ইত্যাদি স্লোগানকে সামনে রেখে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ থেকে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রশাসনিক ভবন পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল শেষে সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘উড়ছে পাখি দিচ্ছে ডাক, কোটা প্রথা নিপাত যাক’, ‘যুদ্ধ হবে আরেকবার, করবো কোটা সংস্কার’, ‘কোটা বৈষম্য দূর কর, নইলে বুকে গুলি কর’, ‘আমার দেশ আমার মা, বৈষম্য মানি না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের মাত্র ২.৬৩ শতাংশ লোক কোটাধারী, অথচ তাদের জন্য বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ। আর বাকি ৯৭.৩৭ শতাংশ মানুষের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৪৪ শতাংশ। দিনে দিনে শিক্ষার্থীদের বিদেশে পাড়ি জমানোর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেখানে দেশের সর্বোচ্চ স্থানে যখন বৈষম্যের হার এত পরিমাণ বেশি, মেধাবীরা মেধার মূল্যায়ন পাচ্ছে না, সেখানে যে শিক্ষার্থী যোগ্যতার ভিত্তিতে দেশের বাইরে থেকে অফার লেটার পাচ্ছে, সে কোন টানে দেশে থাকবে!

দাবি আদায়ের বিষয়ে তারা বলেন, মেরিটোক্রেসি আর কোটা একসাথে থাকতে পারে না। আমরা যদি মনেকরি এ রাষ্ট্র মেরিটোক্রেসিতে চলবে, যোগ্যতার মাধ্যমে চলবে, দক্ষ প্রশাসকের মাধ্যমে চলবে, তাহলে সেখানে কোটার কোনো অবস্থান হতে পারে না।

মানববন্ধনে এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৮ সালের যৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে জাতি কোটা নামক অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিল। সেখান এসে এরকম সিদ্ধান্তে আমরা বিচলিত, শঙ্কিত। কোটা ব্যবস্থায় যদি যোগ্য স্থানে যোগ্য ব্যক্তি যেতে না পারে, তাহলে মুখে যতই উন্নয়নের বুলি আওড়ানো হোক না কেন, দেশ শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যাবে।

অবস্থান কর্মসূচি শেষে যতদিন পর্যন্ত না দাবি আদায় হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একাত্মতা পোষণ করে কোটা বিরোধী আন্দোলন চলবে বলে জানান তারা।

বুধবার (৫ জুন) এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কোটা বহালের রায় দেন।

কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার ফলে এখন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না। পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাত জন। এর আগে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ কোটা তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভায় এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ