ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চুয়েটে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মদ্যপানের অভিযোগ

প্রকাশনার সময়: ০৩ জুন ২০২৪, ১৮:০৪

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ছাত্রদের একটি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে গভীর রাতে মদ্যপানে লিপ্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। গত ৩০ মে রাতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার চুয়েটের ৪তম ব্যাচের (শিক্ষাবর্ষ ২০১৮-১৯) শিক্ষা সমাপনী উৎসবের শেষ দিন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় বাস্কেটবল মাঠে কনসার্ট আয়োজন করা হয়। কনসার্ট চলাকালে ওই রাতে চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের প্রভাষক শাফকাত আর রুম্মান শহীদ তারেক হুদা হলে রাত ৪টার দিকে মদ পান করতে যান। এর কিছু সময় পরে অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী ও চুয়েটের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক কাজী জান্নাতুল ফেরদৌস ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং শিক্ষার্থীদের সামনে মদ পান ও মাদক সেবনরত অবস্থায় রুম্মানকে দেখতে পান। এসময় তিনি উত্তেজিত হয়ে উপস্থিত সকলকে বকাঝকা করেন।

বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, শিক্ষকের কাছে এমন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, আমি কনসার্টের এক মুহূর্তে শহীদ তারেক হুদা হলের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন ওই হলের ৩য় তলায় চেচামেচি শুনি। ছেলেদের কাছে থেকে শুনি যে শিক্ষক ও তার স্ত্রী গণ্ডগোল করতেছে মাদক/মদ পানের বিষয়ে। এরই কিছু পরে তারা হল থেকে বের হয়ে যায়।

তবে এ দিকে বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক কিংবা তার স্ত্রী ঘটনাকে গুজব বলেছেন। ফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী কাজী জান্নাতুল ফেরদৌস বিষয়টি অস্বীকার করেন। ঘটনার রাতে ছাত্র হলে উপস্থিত ছিলেন না জানিয়ে তিনি বলেন, আমি ওই রাতে ছাত্র হলে যাইনি। বিষয়টি নিয়ে গুজব ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।

মদ্যপানের অভিযোগ ও ওই রাতের ঘটনায় শাফকাত আর রুম্মানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই ঘটনা শুনে আমি নিজেও অবাক। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন একটি গুজব, যা আমার নামে ছড়ানো হয়েছে। কেউ কোনো প্রমাণ পায়নি। এভাবে একটি গুজব ছড়ানো চুয়েটের মর্যাদা ক্ষুন্ন করে।

তবে ছাত্রহলটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ওই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তারা সেদিন রাতেই ঘটনা ঘটার সময়েই হল প্রভোস্টকে তৎক্ষণাৎ অবহিত করেন।

এ বিষয়ে শহীদ তারেক হুদা হলের প্রভোস্ট ড. নিপু কুমার দাস বলেন, সেদিন রাতে (শুক্রবার) হল থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, একজন নারী হলে ঢুকে শোরগোল করছেন। সেখানে একজন শিক্ষক ও নাকি রয়েছেন। এবং ঐ নারী নাকি শিক্ষককে চেচামেচি করে বকাঝকা করছেন। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানতে পারি ঐ নারী উক্ত শিক্ষকের স্ত্রী। এসব শোনার পর ঘটনার আঁচ করতে পারি। এরপর ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের নেতৃত্বাধীন পরিদর্শনকারী দলকে জানাই।

বিষয়টি অবগত হয়েছেন এমন জানিয়ে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি মাত্র। অভিযুক্ত শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ড দুঃখজনক। সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে তদন্ত কমিটি করার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত শিক্ষকের এমন অপকর্ম নতুন নয়। তিনি শিক্ষার্থী থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে মাদক সেবন, মারামারিসহ নানাবিধ অপকর্মের অভিযোগ ছিল।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ