সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
সিকৃবি শিক্ষক সমিতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন তারা। এ সময় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ও স্বতন্ত্র সুপারগ্রেড প্রবর্তনের দাবি জানানো হয়।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের নিচ তলায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। দাবি মানা না হলে লাগাতার কর্মবিরতি পালনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
কর্মসূচিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন অনুষদের প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সিকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ আল মামুনের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকরা বক্তৃতা দেন।
সিকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল ১০টা থেকে আমরা সিকৃবি শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। দুপুর ১২ পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার এতগুলা বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও আমরা প্রতিবেশী দেশ ভারতের আইআইটি'র মতো একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে পারি নি যেটা বর্তমানে সারা বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও দপ্তরসমূহে তাদের দক্ষ গ্রেজুয়েটদের দিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছে। আমাদের দেশে বর্তমানে অফিশিয়ালি ৫৬ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যার বেশিরভাগের অবকাঠামোগত ও জনবলসম্বলিত সক্ষমতাই অত্যন্ত নাজুক। ব্যাঙ এর ছাতার মতো তৈরি হওয়া এ সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদের সামগ্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানকে আরো দুর্বল করে দিচ্ছে। আমলাদের একটি কুচক্রী মহল তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছে। যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলার শিক্ষার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এবং তারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সার্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় এনে একধরনের জুলুম চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই পেনশন স্কিম বাতিলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি যদি সুবিচার না করা হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলাতে আরো বেশি অযোগ্য লোকে ভরে যাবে। কারণ যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা আর শিক্ষকতার মতো এমন সম্মানিত ও মহান পেশার প্রতি আকৃষ্ট হবে না।
পাশাপাশি তিনি সামনের দিনগুলোয় আরো কঠোর কর্মসূচির আহ্বান জানাতে গিয়ে বলেন, ফেডারেশন যদি ব্যবস্থা নাও নেয় আমরা শিক্ষক সমিতি দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলাকে সাথে নিয়ে আরো কঠোর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পিছপা হবো না। আর যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হচ্ছে, তত আমরা আমাদের আন্দোলন চালু রাখবো।
আগামী ৬ জুন অর্ধবেলা কর্মবিরতি রয়েছে। ১ জুলাই থেকে যদি নীতিমালা প্রত্যাহার না করা হয়, তবে শিক্ষক ফেডারেশনের সিদ্ধান্তে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে। এসব কর্মসূচিতে সবাইকে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছে সিকৃবি শিক্ষক সমিতি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ