খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিযুক্ত দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে ২০২১ সালের ২৫ মে যোগদান করেন প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিযুক্ত উপাচার্য হওয়ায় তার কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাও ছিল বেশি। এছাড়াও করোনা মহামারীর এক স্থবির পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক করার পাশাপাশি গবেষণায় উদ্যম সৃষ্টি, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ সচল করা ছিলো তার বড় চ্যালেঞ্জ। কর্মমেয়াদের তিন বছরে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার কতটুকু পূরণ করতে পেরেছেন তা তুলে ধরেছেন নয়া শতাব্দী-র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি একরামুল হক।
হাতে নিয়েছেন মেগা প্রজেক্ট
দায়িত্বগ্রহণের পর থেকেই দেখা যায় তিনি একের পর এক অবিশ্বাস্য মেগা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন। শুধু হাতেই নেননি দ্রুত সময়ে তার বাস্তবায়ন করেছেন। উদাহরণ স্বরূপ আমরা দেখতে পারি মেইন গেইট, জিমনেসিয়াম ও জয়বাংলা একাডেমিক ভবনের মত ১০ তলা ভবন। যা এক সময় খুবি শিক্ষার্থীদের কাছে স্বপ্নের মত ছিলো তা শুধু বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে তার হাত ধরেই। এছাড়া এই স্বল্প মেয়াদে অগোছালো একটা ক্যাম্পাসকে একদম নিজের ঘরের বেডরুমের মত সাজিয়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা বর্তমান। পরিশেষে বলতে চাই তার কর্ম মেয়াদে খুবি নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
আল মামুন
২য় বর্ষ
গড়েছেন পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস
ক্যাম্পাসে এসেছি সেই ২০২২ সালের জানুয়ারীতে, তখন থেকে আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অভাবনীয় পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ময়লা ফেলার ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে, এতে ক্যাম্পাস আগের থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। সুন্দর মনোরম গোলপতার ক্যাফেটেরিয়ার সৌন্দর্য অতুলনীয়। এছাড়াও গবেষণার, নতুন মেডিকেল সেন্টার নির্মান করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা ফুল আর ফল গাছে পরিপূর্ণ। সব মিলিয়ে এই অতি অল্প সময়ে অভাবনীয় পরিবর্তন হয়েছে।তাহেরুননেছা সাথী
তৃতীয় বর্ষ
বৃদ্ধি পেয়েছে অবকাঠামোগত সুবিধা
২৫ মে, ২০২১ সালে উপাচার্য হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেন। তিনি উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তা, একাডেমিক ভবন এমনকি প্রাকৃতিক পরিবেশে অনেক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। বহুল জনপ্রিয় গোলপাতা দিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে সুন্দর ক্যাফেটেরিয়া নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এবং 'জয় বাংলা' নামে ১০ তলা একটি ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। একাডেমিক শিক্ষা এবং গবেষণার ক্ষেত্রেও তার অবদান অনস্বীকার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধনেও তার প্রচেষ্টা প্রশংসার যোগ্য। তার হাত ধরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এক অনন্যমাত্রায় পৌছবে এবং বিশ্ব দরবারে স্বমহিমায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে আমি মনে করি।
সুমি সরকার
৪র্থ বর্ষ
সমাধান হয়নি আবাসন সংকটের
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন তার দায়িত্বের তিন বছর পূর্ণ করেছেন। এই সময়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার দিক থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। গবেষণা বরাদ্দ বাড়ার ফলে শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা আরো উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত আবাসন সংকট আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেকটা ভোগান্তির কারণ হয়ে পড়েছে। এই সমস্যাটি সমাধান করলে আশাকরি আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আরো উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।
রাহুল কুমার সরকার
৩য় বর্ষ
সাধিত হয়েছে একাডেমিক অগ্রগতি
গত তিন বছরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। একইসাথে একাডেমিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে এবং বাহ্যিক অবকাঠামোগত উন্নয়নও আমরা দেখতে পাচ্ছি। আউট কাম বেইজড কারিকুলাম চালুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি কোর্স শেষে কি কি শিখতে পারছে ,সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাচ্ছে। এছাড়া স্যারের উল্লেখযোগ্য অবদান গবেষণা ক্ষেত্র। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্ন ভিন্ন শাখায় র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের মধ্যে স্থান অর্জন করেছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের এবং সম্মানের। প্রত্যাশার জায়গায় আমি ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী হিসেবে বলব, ইতিহাস একটি জাতির পরিচয় বহন করে। আধুনিক গবেষণার মাধ্যমে এ ইতিহাস চর্চা আমাদের জাতি-রাষ্ট্র সর্বোপরি সমাজকে ঐতিহ্য সম্পর্কে জাগ্রত করে। তাই স্যারের নিকট প্রত্যাশা থাকবে, সকল ডিসিপ্লিনের গবেষণায় সমান সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করবেন।
তাসনিয়া জামান শাশ্বতী
৪র্থ বর্ষ
গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টিতে ছিলেন একাগ্র
মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন স্যার এক অসাধারণ অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। স্যারের উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি আর কর্মস্পৃহা আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে উন্নীত করতে স্যারের নেয়া বেশকিছু উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- বিশ্বমানের ওবিই কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা, সকল বিষয়ে গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা, ই-নথি চালু করা, বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রিন ক্যাম্পাসে রূপান্তর করা। আমাদের গবেষক, উপাচার্য স্যারকে এখনো সুন্দরবনের কর্দমাক্ত পানিতে নেমে গবেষণা করতে দেখা যায়! গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টিতে স্যারের একাগ্রতা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। স্যারের কর্মতৎপরতায় সম্প্রতি টাইমস হায়ার এডুকেশনের বৈশ্বিক ইয়াং ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করে নিয়েছে আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতে মাননীয় উপাচার্যের হাত ধরে সাফল্যের ছোঁয়ায় উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে যাবে আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
আনিকা নাওয়ার মাহমুদ
২য় বর্ষ
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ