যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ (টিএইচই)-এর গ্লোবাল র্যাঙ্কিংয়ে বৈশ্বিক ইয়াং ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)। র্যাঙ্কিংয়ে বৈশ্বিক তালিকায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ৪০১-৫০০ এর মধ্যে রয়েছে। যা বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবার উপরে।
এবারের প্রকাশিত ইয়াং ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। গবেষণার মান, শিল্প, আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি, গবেষণার পরিবেশ এবং শিক্ষাদান মোট ৫টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে করা ইয়াং ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অর্জন করছে যথাক্রমে ৪৫.২%, ১৭.১%, ৪৩.৭%, ১৪.৫%, ২২.৭%।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দি অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক ও র্যাঙ্কিং কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর সেহরীশ খান বলেন, বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন নিজেই একজন গবেষক। তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দেন। গবেষণার জন্য যথোপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতেও উদ্যোগ নেন। এ ছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে নিয়ে যেতে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেন। যার ফলশ্রুতিতে টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিং, কিউএস র্যাঙ্কিংয়ের পর ইয়াং ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবক্ষেত্রে পরিবর্তনের ছোঁয়া এখন দৃশ্যমান। বর্তমান উপাচার্যের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্বপ্নের পথে ডানা মেলেছে। একের পর অর্জনে দেশে সুনাম ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে। উপাচার্যের নেতৃত্বে শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা, প্রকাশনা, অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অতিদ্রুত বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, টানা দুইবার টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিং এবং কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে স্থান পাওয়ার পর এবার টাইমস হায়ার এডুকেশনের ইয়াং ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান পাওয়ায় গর্বিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। গবেষণার প্রতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনোনিবেশ ও আন্তরিকতার ফলে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় উৎকর্ষ সাধনে সকলের অবদান রয়েছে। একাডেমিক ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। আমি আশা করি, অতিদ্রুত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে।
উল্লেখ্য, ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ বিগত ২০১৯ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড ইয়াং ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং প্রকাশ শুরু করে। এতে যে সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ৫০ বছর কিংবা তার চেয়ে কম, শুধুমাত্র তাদের মধ্যে গুণগত মান বিবেচনায় ধরে এই র্যাঙ্কিং করা হয়। এবার সব মিলিয়ে বিশ্বের ৬৭৩টি বিশ্ববিদ্যালয় এই র্যাঙ্কিংয়ে স্থান করতে পেরেছে, যা বিগত বছর ছিল ৬০৫টি।
র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাদান, গবেষণা, জ্ঞান স্থানান্তর ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির ১৮টি সূচক মানদণ্ড হিসেবে গণনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মৌলিক লক্ষ্য, পাঠদান ও গবেষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও বিবেচনায় করেছে তারা।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ