বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) প্রথমবারের মতো বিশ্ব ভেটেরিনারি সপ্তাহ উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী উদ্বোধনী র্যালি, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং পোস্টার উপস্থাপনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
শনিবার (১১ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ওই অনুষ্ঠানের সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ ও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান বলেন, ভেটেরিনারি পেশা অনেক প্রাচীনতম পেশা। যিশু খিষ্ট্রের জন্মের ৩ হাজার পূর্বে তা চালু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি শিক্ষার উচ্চতর গবেষণা এবং ভ্যাক্সিন উৎপাদন কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করে আসছি। এছাড়াও প্রাণীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন, পেট ক্লিনিক চালু, প্রত্যেক বছর ভেট সেক্টরে অসামান্য অবদান রাখায় শিক্ষকদের পুরস্কার প্রদান, অতীব প্রয়োজনে প্রাণী চিকিৎসা সেবা, পাঠ পর্যায়ে দক্ষতা বৃদ্ধি, ওয়ান হেলথের ওপর উচ্চতর গবেষণা এবং প্রাণিজ পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক। এছাড়াও এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. অলিউল্লাহ, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, ভেটেরিনারি হচ্ছে একটি সর্বজনীন পেশা। দেশে গত বছর ১ কোটি ৭০ লাখের অধিক পশু কোরবানি করা হয়েছে। যার বেশির ভাগ গ্রামের পারিবারিক ছোট্ট খামার গুলো থেকে ২-৩ টা করে এসেছে। তাদের পক্ষে খামারের জৈব নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং নিত্য প্রয়োজনীয় ভেটেরিনারি সেবা ক্রয় সম্ভব নয়। এই কারণে ভেটেরিনারিয়ানরা অপরিহার্য় স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে মোবাইল ভেটেরিনারি সেবা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে কম্বাইন্ড কোর্স সিস্টেম চালু ছাড়া একজনের পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব নয়। এছাড়াও তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নানান বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে দক্ষ হওয়ার এবং দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে দক্ষ ভেটেরিনারিয়ান তৈরি করার অনুরোধ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, ভেটেরিনারিয়ানরা প্রাণির স্বাস্থ্যের পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন নিত্য নতুন রোগের আবির্ভাব হচ্ছে এ সকল রোগের উন্নতর গবেষণা এবং নতুন কৌশল আবিষ্কারের উপর কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিবছর ৪০ লাখের অধিক ভ্যাক্সসিন আমাদনি করে থাকে। তাই আমাদেরকে ভ্যাকসিন উৎপাদনে জোর দিতে হবে। এজন্য দেশে ভেটেরিনারিয়ানদের জন্য স্বতন্ত্র রিসার্চ ইনস্টিটিউট চালু করা দরকার। এছাড়াও কমিউনিটি ভেটেরিনারি শিক্ষা চালু ও বাংলাদেশ কলেজ অফ ভেটেরিনারি সার্জন প্রতিষ্ঠার কথাও বলেন তিনি।
নয়াশতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ