ঢাকা, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬

কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম রঙে সেজেছে বেরোবি ক্যাম্পাস

প্রকাশনার সময়: ০৩ মে ২০২৪, ২৩:১৫ | আপডেট: ০৩ মে ২০২৪, ২৩:২৯

রংপুর শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে পার্কের মোড়ে অবস্থিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ক্যাম্পাসজুড়েই রক্তিম রাঙা সেই কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য আলো ছড়াচ্ছে। গাছে গাছে নয়ানভিরাম রাঙা ফুলের মায়া। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এই ক্যাম্পাসে পূর্ব কিংবা পশ্চিম আকাশে হেলে পড়া সূর্যের সোনালি আলোয় কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুলগুলো দেখে মনে হয় যেন আগুন জ্বলছে। যেকোনও পথিকও পথ চলতে গাছের কাছে তাকিয়ে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়, ক্লান্তি ভুলে যায় ফুলের এই রক্তিম সৌন্দর্যে। গাছের নিচে পড়ে থাকে অজস্র ঝড়াপাপড়ি,যেন মনে হয় রক্তবর্ণ লাল গালিচা।

গ্রীষ্মের শুরুতেই পুরো ক্যাম্পাস যেন কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে রেঙেছে। সবুজ বেরোবির ৭৫ একরে গাঢ় লালের বিস্তার যেন বাংলাদেশের সবুজ প্রান্তরে রক্তিম সূর্যের প্রতীক আর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকারই প্রতিনিধিত্ব করছে। কৃষ্ণচূড়া যেন সূর্যের সবটুকু উত্তাপকে শুষে নিয়ে সৌন্দর্যের এক অভিনব উত্তাপ ছড়াচ্ছে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে। সে উত্তাপেই পুড়ে যাচ্ছে সৌন্দর্য বিলাসীসহ সকল ক্যাম্পাসবাসী ও ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসা সকল দর্শনার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দুই নাম্বার গেইট দিয়ে ঢুকতেই কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দক্ষিণ ও স্বাধীনতা স্মারক মাঠের উত্তর পাশে সারি সারি কৃষ্ণচূড়া গাছ। গাছগুলোর শাখায় শাখায় ফুটেছে রক্তবর্ণ ফুলের সমাহার। এর ফলে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম আভায় দুই নাম্বার গেইটের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে বহুগুণ। এই কারণে এই সড়কের নামকরণ করা হয়েছে কৃষ্ণচূড়া রোড। এ ছাড়াও কৃষ্ণচূড়া ফুলের দেখা মিলে জিরো পয়েন্ট ও ভিসির বাসায়।

শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, পথচারী বা ক্যাম্পাসে আসা দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সময় হৃদয় কাড়ে নয়ন জুড়ানো কৃষ্ণচূড়া। মনের অজান্তেই মুখে অস্ফুট স্বরে বের হয়ে আসে ‘বাহ! কী চমৎকার দৃশ্য। কী মায়াবী জাল বিস্তার করেছে আকাশের পানে। ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা অনেক দর্শনার্থী ও শিক্ষার্থীরা নানাভাবে ফুলের ও ফুলের সাথে নিজের ছবি তুলে তাদের এই সুন্দর মুহূর্তকে স্মৃতিবন্দি করে রাখেন। কৃষ্ণচূড়ার এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের ছবি ঘুরছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ও তাদের ওয়ালে।

কৃষ্ণচূড়া ছাড়াও জারুল, হিজল, বকুল, সোনালু সহ নাম জানা-অজানা অসংখ্য ফুলের গন্ধে ভরে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও আশপাশ।

ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা উম্মে কুলসুম নামের এক দর্শনার্থী বলেন, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষ যখন ক্লান্ত, তখন এই রক্তিম ফুলগুলো মুহূর্তেই হৃদয় প্রশান্ত করে দেয়। যেদিকেই তাকাই, মনে হয় কৃষ্ণচূড়া গাছগুলোতে আগুন লেগেছে। প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে ফুলগুলো। আর এই কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো ক্যাম্পাসে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।

কৃষ্ণচূড়ার এই রক্তিম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নিশিতা বাঙ্গলা বলেন, ফুল পছন্দ নয় এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়। এরমধ্যে কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রায় সকলেরই পছন্দের। ক্যাম্পাসে পড়াশোনার ব্যস্ততায় শত ক্লান্তিতেও কৃষ্ণচূড়ার রঙিন সৌন্দর্যে মুহূর্তেই মন ভালো হয়ে যায়। এই ঋতুতে কৃষ্ণচূড়া ফুল যেন অপরূপ এক সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত বলেন, গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদ আর রুক্ষতাকে ছাপিয়ে ক্যাম্পাসে কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌরভ ছড়িয়ে পড়ছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের লাল পসরার অপরূপ দৃশ্য চোখে ও মনে ধরা দিচ্ছে শিল্পের এক রঙিন প্রচ্ছদ। বারবারই আকর্ষণ করছে কৃষ্ণচূড়ার এই নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। ক্যম্পাসে পড়াশোনার ব্যস্ততায় শত ক্লান্তিতেও কৃষ্ণচূড়ার রঙিন সৌন্দর্যে মুহূর্তেই মন ভালো হয়ে যায়।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ