রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক আবাসিক হলের ক্যান্টিনে নারী কর্মচারীকে শ্লীলতাহানি অভিযোগ উঠেছে ক্যান্টিন মালিকের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এ ঘটনা ঘটে। পরে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে ওই নারী মৌখিক অভিযোগ করলে ক্যান্টিন সিলগালা করার নির্দেশ দেন তিনি। তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ক্যান্টিন মালিক। পাল্টা তিনি ওই নারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত ক্যান্টিন মালিকের নাম হাফিজুর রহমান হাফিজ। তার বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডী এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শী, অভিযোগকারী ও হল প্রাধ্যক্ষ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে ক্যান্টিনে লোকজন ছিল না। এসময় হঠাৎ চিৎকার করতে করতে ক্যান্টিনের বাইরে আসেন অভিযোগকারী ওই নারী কর্মচারী। তিনি এসময় ক্যান্টিন মালিক হাফিজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো ওই নারীর বিরুদ্ধে ক্যান্টিনের জিনিসপত্র চুরির অভিযোগ করেছেন ক্যান্টিন মালিক। পরে প্রাধ্যক্ষের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিলে সাময়িকভাবে হলের ক্যান্টিন সিলগালা করার নির্দেশ দেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন।
শ্লীলতাহানির অভিযোগ করা ক্যান্টিনের ওই নারী কর্মচারী বলেন, ‘ক্যান্টিন মালিক হাফিজের সাথে আমার তিন বছরের সম্পর্ক। আমায় বিভিন্ন সময় সে খারাপ প্রস্তাব দিয়েছে। আজকে দুপুরবেলা আমি ক্যান্টিনে কাজ করছিলাম। এসময় ওই লোক ছাড়া আর কেউ ছিল না। তখন সে আবার আমার শ্লীলতাহানি করে।’ তবে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে অস্বীকৃতি জানান এই নারী। তিনি বলেন, ‘আমার পাড়ায় মান সম্মান আছে। একটা বড় ছেলে আছে। সবকিছু বিবেচনা করে আমি অভিযোগ করতে চাচ্ছি না।’
তবে অভিযোগের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ক্যান্টিন মালিক হাফিজুর রহমান। তার ওই নারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ওর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। ওই মহিলা ক্যান্টিন থেকে চাল চুরি করে পেছনের দরজা দিয়ে পালাচ্ছিল। আমি দেখতে পেয়ে ওকে আটকাই এবং দু-তিনটে চড় মারি। তখন সে নিজেই কাপড় ছিঁড়ে বলে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দেবে। তারপর হল গেইটে এসে চেঁচামেচি শুরু করে।’
এ বিষয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হলের ক্যান্টিন পরিচালক হাফিজের এক মহিলা কর্মচারী চিৎকার করতে করতে বাইরে আসে। সে আমাদের কাছে অভিযোগ করে, হাফিজ তাকে খারাপ প্রস্তাব দিয়েছে। এর আগেও না কি সে (হাফিজ) তাকে খারাপ প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে ক্যান্টিন পরিচালক পাল্টা অভিযোগ করেন, ওই মহিলা চাল-ডাল চুরি করে পালাচ্ছিল। পরে তাকে ধরলে সে এইসব কাণ্ড করে। আমরা লিখিত অভিযোগ দিতে বললে কেউই অভিযোগ দেয়নি। তাই আপাতত শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে ক্যান্টিন সিলগালা করে দিয়েছি।
হল প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, আগামী রোববার আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে দিব। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের সাময়িক অসুবিধার কথা বিবেচনা করে ডাইনিংয়ে সকালের খাবারের ব্যবস্থার কথাও জানান তিনি।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ