শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

ভেটেরিনারি দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

প্রকাশনার সময়: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২২ | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৪১

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস। বাংলাদেশে ২০০৮ সাল থেকে এই দিবসটির উদযাপন শুরু হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরও ভেটেরিনারি শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণের সাথে সম্পৃক্ত এবং ভেটেরিনারি শিক্ষা ও সম্প্রসারণের ধারক-বাহক সকল প্রতিষ্ঠানে জাকজমকপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি। দিবসটিতে ভেটেরিনারি শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ নিয়ে যা ভাবছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। তাদের অনুভূতি, প্রত্যাশা ও সমস্যা শুনেছেন মো. লিখন ইসলাম।

প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শেষ শনিবার এই দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে থাকে। সারা বিশ্বের মতো রীতিমতো বাংলাদেশেও দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করা হয়। বিভিন্ন ধরনের মহামারীতে রোগ শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে ভেটেনারিয়নদের অবদান অনস্বীকার্য। এছাড়া খাদ্য সুরক্ষা, নিরাপদ পুষ্টি নিশ্চিত ,খাদ্য সংরক্ষণ ইত্যাদিতে ভেটেরিনারিয়ানরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্যারাসাইট, মশা, মাছি কীটপতঙ্গ দ্বারা মানুষের ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, কালা জ্বর, চিকুনগুনিয়া, জলাতঙ্ক এবং ডায়রিয়া সহ অনেক রোগের উৎপত্তি পশুপাখি থেকে। বিশ্বে এ পর্যন্ত যত ধরনের মহামারী হয়েছে এবং বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে তার মধ্যে অধিকাংশই প্রাণী থেকে উৎপত্তি। আর এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে হিউম্যান ডাক্তারদের পাশাপাশি ভিটেরিনারিয়ারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

সারাবিশ্বে ভেটেনারি চিকিৎসা রোগ নির্ণয় ও রোগ ব্যবস্থাপনার ব্যাপক অগ্রগতি হলেও বাংলাদেশের অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। বিভিন্ন ধরনের ভেটেরিনারি প্রতিষ্ঠান যেমন অত্যাধুনিক রোগ নির্ণয় ল্যাব, বিভিন্ন ধরনের জুনোটিক ডিজিজ নির্ণয় কেন্দ্র ইত্যাদি করতে পারলে দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন সাধন হবে।

এছাড়াও ভেটেরিনারিয়ানদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা, ভেটেরিনারিয়ানদের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাইভেট জবের ক্ষেত্রে ভেটেরিনারিয়ানদের পদে ডিপ্লোমা ভেটদের নিয়োগ বন্ধ করা। পশু চিকিৎসক শব্দটির পরিবর্তে ভেটেনারি ডাক্তার শব্দের বহুল প্রচার ও বাস্তবায়ন করা সকল ভেটেরিনারিয়ানদের দাবি।

-মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।

১৮৬৩ সালে এডিনবার্গ ভেটেরিনারি কলেজের প্রফেসর জন গ্যামেজের হাত ধরে সর্বপ্রথম ইউরোপে ভেটেরিনারিয়ানদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভার মূল উদ্দ্যেশ ছিল এপিজুনোটিক রোগ এবং প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা। পরবর্তীতে সারা বিশ্বে এপ্রিল মাসের সপ্তাহের শেষ শনিবার বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস হিসাবে পালন হয়ে আসছে। বাংলাদেশে ২০০৮ সাল থেকে এই দিবসটির উদযাপন শুরু হয়। এর মূল উদ্দ্যেশ হচ্ছে প্রাণীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ এবং পরিবেশ ও জন স্বাস্থ্য সুরক্ষা। এইবারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ভেটেরিনারিয়ানরাই অপরিহার্য স্বাস্থ্যকর্মী। কারণ একজন ভেটেরিনারিয়ান সাধারণ মানুষের ঘরে রোগমুক্ত দুধ, ডিম, মাংস এবং প্যাকেটজাত ডেইরি পণ্য ইত্যাদি পৌঁছাতে এবং জুনোটিক রোগের বিস্তার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাণিজ সম্পদের প্রসারণ, সংকর জাত ও নতুন ঔষধ উদ্ভাবনে ভূমিকা পালন করে। জুনোটিক রোগ হচ্ছে এক ধরনের স্পর্শকাতর রোগ যা বন্যপ্রাণী ভক্ষণ এবং সংস্পর্শের মাধ্যমে প্রাণী থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যা পরবর্তী মহামারী রূপ ধারণ করে। সবারই করোনা ভাইরাসের কথা মনে আছে যা বন্যপ্রাণী বাদুর ভক্ষণের মাধ্যমে সর্বপ্রথম চীনে ছড়িয়ে পড়ে। সবোর্পরি সুন্দর পৃথিবী নির্মাণ এবং ভেটেরিনারিতে গবেষণা ও অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারকে সদয় হওয়া চাই।

পরিশেষে এটা বলা যায় যে মানুষ এবং প্রাণীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা চিকিৎসা ও রোগ প্রতিরোধে হিউম্যান ডাক্তারদের পাশাপাশি ভেটেরিনারিয়ানদের একসাথে কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।

- মো. রিয়াজ হোসাইন, শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

নয়া শতাব্দী/এনএইচ/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ