রমজান মাস মানুষের মাঝে আত্মসংযম বৃদ্ধি করে এবং ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলিয়ে সাম্যের বার্তা দেয়। সমাজের অনাথ, দুস্থ এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের নিত্যদিনকার কষ্ট এক মূহুর্তের জন্যে হলেও উপলব্ধি করার শিক্ষা দেয় সিয়াম সাধনার এই মাস। অনাথ, দুস্থ, সুবিধাবঞ্চিত এবং সমাজের নিম্ন শ্রেণির মানুষের দুঃখ ও কষ্ট উপলব্ধি করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষাও দেয় এই রমজান মাস।
রমজানের এই প্রকৃত শিক্ষায় উজ্জীবিত হয়েই কিছু সংখ্যক মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কৃষিবিদ খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ। রমজানে মাসব্যাপী গরিব-দুঃখী এবং খেটে খাওয়া শ্রমজীবি ও সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন ইফতার।
জানা যায়, সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগ এবং অর্থায়নে প্রতিদিন ৭০ জন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে নিজ হাতে ইফতার বিতরণ করেন তিনি। এরমধ্যে রয়েছে আবাসিক হলের কিছু শিক্ষার্থী, যারা প্রকৃতপক্ষেই দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত কিন্তু মুখে বলতে পারেন না এমন শিক্ষার্থী। যাদের পরিচয় গোপনে রেখে প্রতিদিন ইফতার পৌঁছে দেন তিনি। প্রতিদিনের ইফতারের প্যাকেটে থাকে ভিন্নতা। কোনো দিন খিচুড়ি-মুরগি, কোনোদিন বিরিয়ানি, আবার কোনোদিন থাকে ছোলা, বুট, পেয়াজি, চপসহ অন্যান্য। ২৪ রমজান পর্যন্ত তার এ ইফতার বিতরণ কার্যক্রম চালু ছিল। ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ায় সেটি এখন বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সবার একসাথে ইফতার করার ব্যবস্থা করেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইফতারের আগে আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে এসে হাজির হোন বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ ও নেতাকর্মীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিকশাচালক, অটোচালক, গরিব, অনাথ এবং দুস্থ মানুষের হাতে তুলে দেন ইফতার প্যাকেট।
ইফতার নিতে আসা এক ব্যক্তি জানান, আমি প্রতিদিন তার ইফতারের জন্য অপেক্ষা করি। তার ইফতারের জন্যই এই রোজার মধ্যে একটু ভালো খাবার আমাদের ভাগ্যে জুটেছে। অনেকসময় দুইবেলা খেয়ে না খেয়েই রোজা রাখতে হয় আমাদের। তার দেওয়া ইফতার দিয়েই আমরা রোজা ভাঙ্গি। আল্লাহ তার ভালো করুক এই দোয়া করি।
এই ব্যাপারে খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, মাসব্যাপী ইফতার বিতরণে ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিদিন ৭০ জনকে ইফতার বিতরণ করে থাকি। এরমধ্যে ৪০ জন শিক্ষার্থী ও বাকিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিব, অনাথ এবং দুস্থ মানুষ। অসহায় শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরিচয় গোপন করে ইফতার পৌঁছে দেওয়া হয়। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই ইফতার বিতরণ কর্মসূচি শুরু করি। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রলীগের সাবেক প্রবাসী কর্মী ও বর্তমান সামর্থ্যবান কর্মীরা আর্থিকভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
কেন্দ্রীয়ভাবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি ইউনিটের উপর গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণের নির্দেশনা থাকলেও ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় মাসব্যাপী এই ইফতার বিতরণ কার্যক্রম চালিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ