কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) অনিরাপদ কর্মক্ষেত্র ও পেশাগত বিশৃঙ্খলার কথা বলে ক্রীড়া কমিটির আহ্বায়কের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল হক।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রেজিস্ট্রার দপ্তরে প্রেরিত মোহাম্মদ আইনুল হক স্বাক্ষরিত এক পদত্যাগপত্রে বিষয়টি জানা যায়।
পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসন কর্তৃক বিভিন্ন অনিয়ম এবং সেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরিকৃত সংকটের কোনো সমাধান না করে উপরোন্ত নতুন নতুন সংকট তৈরি, অনিরাপদ কর্মক্ষেত্র এবং পেশাগত বিশৃঙ্খলা তৈরির পাশাপাশি বিভিন্নভাবে শিক্ষকদের মর্যাদাহানী করা হচ্ছে। এ সমস্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে আমি উক্ত পদ সমূহের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করছি।
এবিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী বলেছেন, আজকে ক্রীড়া পরিচালনার কমিটির আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিনিধি পদত্যাগ করেছেন। আমি পদত্যাগপত্র হাতে পেয়েছি।
এবিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল হক বলেন, শিক্ষকদের পদোন্নতির বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী, পদোন্নতি না দেওয়া, শিক্ষকদের পদোন্নতির সাথে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেওয়া, শর্ত পূরণ হলেও শিক্ষকদের স্থায়ী না করা সহ ইত্যাদি কারণে পদত্যাগ করেছি। পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়টি জানি যে, একজন শিক্ষকের যোগদান ঠেকিয়ে অবৈধভাবে ডিন নিয়োগ এবং শিক্ষকদের ওপর হামলার বিচার না করে সিন্ডিকেটে অবৈধ ভাবে ডিন নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নতুন নতুন সংকট তৈরি করছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষকদের হেনস্তার ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক মো. কামরুল হাসান। শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা ও অশিক্ষকসুলভ আচরণের প্রতিবাদে একই দিন হাউস টিউটরের পদ ছাড়েন পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুলছুম আক্তার।
১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের প্রতি অন্যায্য আচরণের প্রতিবাদে সহকারী প্রক্টরের পদ ছাড়েন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান। প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগে ৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষের পদ ছাড়েন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন মজুমদার। সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে থাকা, না থাকার অর্থ একই উল্লেখ করে বুধবার (২৭ মার্চ) পদত্যাগ ড. শেখ মকছেদুর রহমান।
গত ২০ মার্চ প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম উল্লেখ করে এবং এর প্রতিবাদে এবার চারজন আবাসিক শিক্ষক পদত্যাগ করেন। তারা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান, কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষক অর্ণব বিশ্বাস ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষক জয় চন্দ্র রাজবংশী।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ