রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ প্রকাশের পর দফায় দফায় হুমকির শিকার হচ্ছেন নাজমুল নামের ওই খাবারের দোকানি। অভিযোগ উঠেছে এবার শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব আগামী রোববারের মধ্যে দোকান তুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তবে দোকানে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও বাকি অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রলীগের এই শীর্ষ নেতা।
ভুক্তভোগী দোকানী জানান, শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব দোকনিকে ডেকে নিয়ে হুমকি দিয়েছেন। এছাড়াও সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই একাধিকবার ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসেছেন।
গত মঙ্গলবার ইফতারির পর নাজমুল নামের ওই দোকানির কাছে গিয়ে চাঁদা দাবি করেন ছাত্রলীগের দুই নেতা। এ সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড ‘নয়া শতাব্দী’ প্রতিনিধির হাতে আসে। রেকর্ডটিতে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাকে খাবারের দোকানির কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করতে শোনা গেছে। এর ভিত্তিতেই বুধবার নয়া শতাব্দী পত্রিকায় 'চাঁদা চেয়ে ছাত্রলীগ নেতা: আপনি আমাদের দেখবেন, আমরা আপনাকে দেখবো' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয় তাদের বিরুদ্ধে। এসব সংবাদের জের ধরেই এখন তাকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে জানান ভুক্তভোগী দোকানি।
আজ বিকেল ৫টার দিকে ভুক্তভোগী দোকানির সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। নয়া শতাব্দীকে তিনি বলেন, ‘গালিব ভাই এসে বলে গেছে আগামী রোববারের মধ্যে তারা আমার দোকান উঠিয়ে দেবে। গালিব ভাই বলেছে, ‘এই দুই দিনই তুই ব্যবসা করে নে, এরপর তোর মেয়াদ শেষ।’ আমি নাকি গালিবের রেকর্ড করে আপনাদের দিয়েছি। আমি বলেছি, ভাই দেখেন আমার ফোনে রেকর্ডিং আছে না কি। আমার ফোনে তো মেমোরি কার্ডই নাই। এরপর গালিব ভাই বলেছে, ‘সাংবাদিককে বলবি না কোনো বালকে বলবি বলেক। কী করতে পারে দেখবো।’ এসব বলে জিয়া হলের দিকে চলে গেছে।’
দোকানির স্ত্রী বলেন, ভাই অল্প সাধে কি আমরা এখানে দোকান দিয়েছি। আমি বাড়ির মহিলা মানুষ আমি কেন এখানে দোকান দিয়ে খাবার বিক্রি করবো। কষ্ট হচ্ছে তাই এখানে ব্যবসা করতে হচ্ছে। না হলে আপনার ভাই খাবার বিক্রির জন্য কি আমাকে এখানে নিয়ে আসে?
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। তিনি বলেন, আমি গেছিলাম। সেখানে গিয়ে আমি বলেছি, তোমার ‘বৈধ’ ব্যবসা তুমি কেনো টাকা দিবে? এরপর থেকে কিছু হলে তুমি আমাকে জানাবা।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বোল পাল্টিয়ে বলেন, ক্যাম্পাসের যেসব বৈধ দোকান আছে সেগুলো ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলবে। তবে ওই দোকানটি বৈধ কি না তা খোঁজ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, চাঁদা দাবি করা ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ এবং শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ওই হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ। এদের মধ্যে সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী এবং মিনহাজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ