ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের আশ্বাস উপাচার্যের

জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা 
প্রকাশনার সময়: ১৬ মার্চ ২০২৪, ০৯:৩৫

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফাইরুজ আবন্তিকা নামে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে মধ্যরাতেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে ফাইরুজ আবন্তিকার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও ক্যাম্পাসের ভিতর টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলন করে।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে রাত ১টার পর ক্যাম্পাসে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম। এসময় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আটকে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তখন ড. সাদেকা হালিম শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় ঘোষণা দেন।

এসময় এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত কর্মদিবস সময় নিতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আগামী ১২ ঘণ্টায় মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থার দাবি জানান। একই সঙ্গে রাতের মধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বিগত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানিসহ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসনের গাফিলতির কারণে অভিযুক্তরা পার পেয়ে গেছেন। তাই এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। পরে উপাচার্য ক্যাম্পাসে এলে শিক্ষার্থীরা তাকে ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সঙ্গে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপাচার্যকে ক্যাম্পাসের ভেতরে যেতে দিতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করে।

সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থানের পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন উপাচার্য। এরপর তিনি মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে উপাচার্য সাদেকা হালিম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে আমাকে দেওয়া ক্ষমতায় অভিযুক্তদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছি।

এই ঘটনার সকল বিষয়ে আমলে নিয়ে, তদন্ত ব্যাপক পরিসরে করব। যারা দায়িত্ব অবহেলা করেছে তাদের চিহ্নিত করা হবে। আর প্রতিবেদন পাওয়া মাত্র তাদের বহিষ্কারের ব্যবস্থা নিব। দ্রুত সময়ে সবকিছু হবে।’

এর আগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ফাইরুজের ওই সহপাঠীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার এবং ওই সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা জেলা সদরের নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। পরে তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, ফাইরুজ আবন্তিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আত্মহত্যা চেষ্টার আগে ফেসবুকে দেয়া দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করেছেন।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ