শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচের নামকরণকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ ও একই বর্ষের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশফাকুর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ফের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়।
জানা যায়, ২০২১-২২ শিক্ষার্থীদের ব্যাচের নামকরণ নিয়ে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে কথোপকথন হয়। ব্যাচের নাম সেরা-২১ দেওয়া হয়। যেখানে ব্যাচের নামকরণ নিয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও মামুন শাহ'র সমর্থক তানভীর ইশতিয়াক আপত্তি তুলে। তখন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও খলিলের সমর্থক শান্ত তারা আদনান তাকে (ইশতিয়াক) শাহপরাণ হলে ডাকেন। তখন তাদের মাঝে উচ্চ বাক্য বিনিময় হলে ঘটনার মীমাংসার উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতারা শাহপরাণ হলের গেস্ট রুমে তাদের নিয়ে বসে। এসময় মামুন শাহ'র কর্মী ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৈমুর সালেহীন তাওস গেস্ট রুমে ঢুকেন। মীমাংসার পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে সে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ইশতিয়াককে নিয়ে চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, পরবর্তীতে এ ঘটনার জের ধরে খলিল গ্রুপের কর্মী শান্ত তারা আদনান লাঠিসোঁঠা নিয়ে এবং ওই গ্রুপের অন্য সমর্থকরা অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বঙ্গবন্ধু হলে গিয়ে মামুন শাহ'র কর্মীদের উপর চড়াও হয়। এসময় মামুন শাহ'র সমর্থকরা হলের গ্রাউন্ড ফ্লোরে জয় বাংলা স্লোগানে হলকে উত্তপ্ত করে তুলে। তৎক্ষনাৎ হলের নিরাপত্তাকর্মীরা হলের কেচি গেট বন্ধ করে দেয়। তখন খলিল গ্রুপের কর্মীরা হলের বাহির থেকে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এতে মামুন শাহ গ্রুপের দুই কর্মী আহত হয়। ঘটনার এক পর্যায়ে মামুন শাহ’র সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হল গেট থেকে বের হয়ে খলিলুরের সমর্থকদের ধাওয়া দেন। এতে খলিলুরের সমর্থকরা পিছু হটেন।
এ বিষয়ে মামুন শাহ’র সমর্থক তানভীর ইশতিয়াক বলেন, ব্যাচের নামকরণ পছন্দ না হওয়াতে আমি কথা বলেছিলাম। পরে শান্ত তারা আদনান আমাকে শাহপরাণ হলে ডেকে নিয়ে শাসাইছে ও সিনিয়রদেরকে নিয়ে আমাকে মারতে গেছিল। পরে আমি আমার গ্রুপের ভাইদের জানাই। তারা আমাকে সেখান থেকে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে গিয়েও আদনানরা ঝামেলা করেছে বলেন ইশতিয়াক।
অন্যদিকে খলিলুর রহমানের সমর্থক শান্ত তারা আদনান বলেন, ‘ব্যাচের নামকরণ নিয়ে ঝামেলা হওয়াতে মীমাংসার উদ্দেশ্যে বসা হয়। সেখানে সেটা মীমাংসাও হয়। কিন্তু পরে ইশতিয়াক তার গ্রুপের সমর্থকদের নিয়ে ঝামেলা বাধায়। সংঘর্ষের সময় আমার হাতে কোনো অস্ত্রশস্ত্র ছিল না।’
ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান বলেন, ‘২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নামকরণ নিয়ে মেসেঞ্জার গ্রুপে ঝামেলা হয়। পরবর্তীতে তারা মীমাংসার বসছিল। পরে ওদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয় এবং সংঘর্ষ বাধে। প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্রলীগের সিনিয়ররা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মামুন শাহ’র মোবাইলে কল দিলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ব্যাচের নামকরণ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন আহত হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়ছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ