ঢাকা, বুধবার, ১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩১, ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চড় মেরে জুনিয়রের কান ফাটালেন সিনিয়র

প্রকাশনার সময়: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১৯:০১
ছবি- অভিযুক্ত আকিব ইবনে সাইদ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) রঙ করা ককশিট কুড়িয়ে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এক জুনিয়র শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মেরে কান ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোটার‍্যাক্ট ক্লাবের সভাপতি আকিব ইবনে সাইদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি অভিযুক্ত আকিব।

ভুক্তভোগী সুমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (সিডিএম) বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত আকিব ইবনে সাইদ অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী, এআইএস ক্লাবের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এআইএস বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক।

জানা যায়, বুধবার (৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রোটার‍্যাক্ট ক্লাব ও ফটোগ্রাফিক সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয় গেইট সংলগ্ন একটি জায়গায় ফটো এক্সিবিশন ‘আরণ্যক - ARANNYAK’ অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ৭ মার্চ সন্ধায় রঙ করা ককশিট কুড়িয়ে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকস্থ যুথি-বীথি হোটেলের সামনে সুমন কুমার মন্ডল নামের এক শিক্ষার্থীকে সজোরে থাপ্পড় মারেন আকিব ইবনে সাঈদ। এসময় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এরপর তাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি হঠাৎ করে অনেক জোরে চড় মারার শব্দ শুনতে পাই। পরে আশপাশে তাকিয়ে দেখি আকিবসহ কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে আর একটা ছেলে মাটিতে পড়ে গেছে। পরে বুঝতে পারি ছেলেটাকে থাপ্পড় মারার কারণে মাটিয়ে পড়ে গেছে।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুমন কুমার মন্ডল বলেন, বুধবার (৬ মার্চ) আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আরণ্যক অনুষ্ঠান হয়েছে। সেখানে রঙ করা কিছু পুরনো ককশিট ছিলো। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ায় এগুলো ক্যাম্পাসের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ফেলে দেবে ভেবে কয়েকটা নিজের রুমে সাজিয়ে রাখবো তাই নিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় যুথি বীথী হোটেলের সামনে আমাকে দুইজন আপু আটকায়, সেখানে আকিব ভাইও ছিলো। উনি আমার কোনো কথা না শুনে 'কেনো ওগুলো নিয়ে যাচ্ছি? ' বলেই আমার কান বরাবর মুখে জোরে থাপ্পড় মারে। সাথে সাথে আমি অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যাই।

তিনি আরও বলেন, এরপরে তারা আমাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখান থেকে ওষধ দিয়েছে কিন্তু কানে কিছু শুনতে পাচ্ছি না। আমার বধির হওয়ার ভয় কাজ করছে। এই বিষয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যারকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি, তিনি আমার কথা শুনেছেন এবং লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলেছেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আকিব ইবনে সাইদের সাথে এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।

যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ঘটনাটি রোটার্যাক্ট ক্লাবের প্রোগ্রাম ছিলো, এখানে ছাত্রলীগের কিছু ছিলো না। এটা যদি ছাত্রলীগ কেন্দ্রিক হতো, তাহলে ঘটনার দায়ভার আমি নিতাম। ব্যক্তিগতভাবে কেউ অপরাধ করলে তার দায়ভার ছাত্রলীগ নেবে না। তবে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এবিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আলম হোসেন বলেন, যদি আমাদের কাছে কোনো ক্লাবের দায়িত্বরত কারও বিরুদ্ধে যদি এমন কোনো অপ্রীতিকর ও অবাঞ্ছনীয় কাণ্ডের লিখিত কোনো অভিযোগ আসে তাহলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এবং তার ক্লাবের সাথে সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিব।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো: হাফিজ উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি শুনেছি। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাতে সিডিএম বিভাগের ছাত্র সুমন আমাকে ফোন দিয়ে সবকিছু জানিয়েছে। আমি তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি, অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ