সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে (বার্ড) তিন দিনব্যাপী গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান ও কোঅপারেটিভস বিষয়ে অ্যাকশন রিসার্চ ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে, ৪ মার্চ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান ও উন্নয়ন বিভাগ ও কৃষি বিপণন ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ নিতে বার্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় বার্ডের ইতিহাস দিয়ে তিন দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণের কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় বার্ডের প্রশিক্ষণ শাখা ডিরেক্টর ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বার্ডের ইতিহাস ও কার্যক্রম তুলে ধরেন ।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কৃষি ও পরিবেশ শাখার ডিরেক্টর ড. শিশির কুমার মুন্সি কৃষি সেক্টরে ব্যবহৃত নতুন প্রযুক্তির কার্যক্রম তুলে ধরেন।
পরের দিন (০৫ মার্চ) সকালে রায়চোঁ সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ম্যানেজার হাজি আমিনুল ইসলাম সমবায় সমিতির সুযোগ সুবিধা ও বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গ্রামীণ সমবায় ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব না। বর্তমানে দেশে কৃষি জমির পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এককভাবে চাষাবাদ করলে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব না। কৃষির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সমবায় ভিত্তিক চাষ, যা কেবলমাত্র গ্রামীণ সমবায়-ই করতে পারে।’
আলোচনা সভা শেষে শিক্ষার্থীরা রায়চোঁ গ্রামবাসীদের কাছ থেকে তাদের জীবনযাত্রার মান, সমবায় সমিতির বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যার কথা জানতে চান।
এ সময় গ্রামবাসী জানায়, ‘সমবায় সমিতি শুধু আমাদের আর্থিকভাবে সুবিধায় নয়, কম দামে সার, বীজ ও কীটনাশক সুবিধা দিয়ে থাকে, যা বাজার দামের চেয়ে কম। এছাড়াও এখানকার সবাই সমান সুযোগ-সুবিধা পায়, যার জন্য সবারই সমান সুযোগ থাকে উন্নতি করার।’
এসময় সমবায় সমিতির গুরুত্বারোপ করে কৃষি বিপণন ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্বরূপ বড়ুয়া বলেন, ‘সমবায় সমিতির মাধ্যমে একটি সমাজ সহজেই বহুমুখী উন্নয়ন করতে পারে। প্রবাদ প্রবচনে আছে 'দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ'। অর্থাৎ সমবায় এর মাধ্যমে কৃষির উন্নয়ন, কৃষি পণ্যের সঠিক বাজারজাতকরণ সম্ভব। বড় থেকে ক্ষুদ্র বা মাঝারি কৃষকরা সমবায়ের আওতায় আসলে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদন বাড়ানো, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সামগ্রিক কৃষকের উন্নয়ন সম্ভব।’
অন্যদিকে সিকৃবির গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান ও উন্নয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিটু চৌধুরী বলেন, ‘গ্রামের মানুষজন গ্রামীণ পরিবেশ ও জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে সচেতন না। তাদের জীবনযাত্রার মান, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে বার্ড, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে যাচ্ছে।’
শেষদিন (৬ মার্চ) সকালে গ্রামীণ জীবনযাত্রা উন্নয়ন ও সমবায় সমিতি নিয়ে চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রেজেন্টেশন সম্পন্ন হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, বার্ডের প্রশিক্ষণ শাখা ডিরেক্টর ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত ডিরেক্টর জুনাইদ রহিমসহ সিকৃবির গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান ও উন্নয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিটু চৌধুরী, কৃষি বিপণন ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্বরূপ বড়ুয়া এবং সহকারী অধ্যাপক দেবাশীস শর্মা।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ