প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ গাজি হাফিজুর রহমান লিকুর পরিচয়ে প্রতারণা করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়ান্দা বিভাগের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হিসাব নিয়ামক দপ্তরের উচ্চমান সহকারী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত।
সোমবার (৪ মার্চ) একই ঘটনায় মো. আনিস নামে আরও একজনকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করেছে মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বিষয়টি সোমবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার ইয়াসির আরাফাত ও মো. আনিস প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও সরকারি অন্যান্য নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে ফোন করে মনোনীত ব্যক্তিদের চাকরি দেওয়ার তদবির করতেন। এ ছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে ফোন করে চিকিৎসার খরচ কমানো ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের রোগী দেখার সিরিয়াল দেওয়ার কাজ করে আসছিলেন। এসব করে তারা হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত এপিএস- ২ এর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মনোনয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, কন্ট্রাক্টরি, চাকরি দেওয়া, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আবার নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত এপিএস-২ পরিচয়ে প্রতারণা করা ভুয়া এ লিকুকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আঞ্জুমান আরা স্থানীয় রাজনীতি করেন এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদে নারী কোটায় এমপি হতে চেয়েছিলেন। সেজন্য তিনি আনিস নামে একজন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আনিস তার কাছ থেকে মনোনয়ন দেওয়ার নাম করে প্রথমে ১২ লাখ টাকা এবং মোট ৬২ লাখ টাকা দাবি করেন পরে ভুক্তভোগী নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে পুরো টাকা পাঠিয়ে দেন। এরপর আর ওই নম্বর খোলা পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে আরেক ভুয়া লিকু বিভিন্ন লোককে টেলিফোন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি দেওয়ার জন্য বলেন। একজনের চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়ে এভাবে প্রতারণা করে চাকরি দেওয়াও হয়ে গেছে। এভাবে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য তদবির করে দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন । এভাবে অসদুপায় অবলম্বন করে লিকু নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা আমসাৎ করেছে। আমরা দুই প্রতারক ভুয়া লিকুকে গ্রেফতার করেছি। গ্রেফতারের পর তারা তাদের অপরাধ শিকার করেছে।'
জানা যায় , ইয়াসির আরাফাত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবীর পলাশের সম্বন্ধী ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিনের চাচাতো ভাই। এ ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে সাহাবউদ্দিনও কি ডিবির হাতে গ্রেফতার?
এ বিষয়ে জানতে সাহাবউদ্দিনকে একাধিকবার ফোনে কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি হিসাব নিয়ামক দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে লিখিত কোন তথ্য নেই, তবে নিউজের মাধ্যমে জানতে পারলাম তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ