'ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত...' কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের এই কবিতার চরণ বসন্তকে বরণ করার আহ্বান জানায়। শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে ধরায় এসেছে বসন্তের হাওয়া। বসন্তের আগমনে প্রকৃতিতে সঞ্চার হয়েছে নতুন প্রাণ। নানা রঙের ফুলে ছেয়ে যায় প্রকৃতি। গাছে গাছে গানের আসর জমায় কোকিল-দোয়েলরা।
বসন্তের আগমনে প্রকৃতি খুলে দেয় তার দক্ষিণ দুয়ার। সে দুয়ারে বয়ে যায় ফাগুনের দখিনা হাওয়া। যা ছুঁয়ে যায় শিশু-বৃদ্ধ থেকে তরুণ মনে। প্রতিবারের মতো এবারও বসন্তকে বরণ করে নিতে নতুন সাজে সেজেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)।
ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে ছেঁয়ে গেছে ফুলের ঘ্রাণ। কান পাতলেই শোনা যায় পাখির কিচির-মিচির ডাক। বসন্তকে বরণ করে নিতে তরুণীরাও সেজেছে বৈচিত্র্যময় ঢঙে। কেউ চুলে খোঁপা বেঁধেছে ফুল জড়িয়ে, কেউবা ফুলের মালা দিয়ে বেণী করে, আবার কেউ ফুলের বিভিন্ন অলঙ্কারে সেজে ঘুরতে বের হয়েছে। ছেলেরাও পিছিয়ে নেই। সাদা পাঞ্জাবি, ফতুয়াসহ বিভিন্ন রং-বেরঙের পোশাকে নিজেদের সজ্জিত করে তুলেছে।
'ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান, তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান' গানে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন সংলগ্ন মহুয়াতলায় বাংলা বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এবারের বসন্ত বরণ উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
বসন্তের আনন্দের মাধ্যমে মনের আনন্দ দৃশ্যমান হয় মন্তব্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম তালুকদার বলেন, ‘শীতের রিক্ততার পরে বসন্তের মাধ্যমে প্রকৃতিতে যেমন আনন্দের জোয়ার লাগে ঠিক তেমনি বসন্তের মাধ্যমে আমাদের মনের আনন্দ দৃশ্যমান হয়। এই আনন্দ, উৎসবমুখর পরিবেশ সারাবছর ধরে বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই আমাদের এ আয়োজন।’
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বলেন, ‘বসন্ত মানেই নতুন প্রকৃতির জয়গান। বসন্তের মাধ্যমে প্রকৃতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। বসন্ত আমাদেরকে উল্লসিত ও উৎফুল্ল করে। বসন্তের মধ্য দিয়ে আমরা যেন জীবনকে নতুনভাবে উপলব্ধি করতে পারি।'
বসন্তকে উপলক্ষ্য করে দিনব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে সন্ধ্যা ৭টায় কবি জসীম উদ্দীনের কাব্যগ্রন্থ ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ এর নাট্যপ্রযোজনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে মঞ্চায়িত হবে।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ