জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেছেন, 'বিচারহীনতা শিক্ষার্থীদের অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সংকটগুলো হয়েছে এতে যদি প্রশাসন সক্রিয় থাকতো এবং বিচারের আওতায় আনতো তাহলে ধর্ষণের মতো এত জঘন্য ঘটনা ঘটতো না।'
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের ব্যানারে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি জানায়।
দাবিগুলো হলো- অছাত্রদের হল থেকে বিতাড়িত করা, জাবিতে সম্প্রতি সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ও সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান ও প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলমের পদত্যাগ, যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত পাবলিক হেল্থ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির অব্যাহতি দেওয়া এবং ক্যাম্পাসে মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সমাবেশে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়ার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল। তিনি বলেন, 'আমাদের দাবি আদায়ের আন্দোলন দানবের বিরুদ্ধে। ধর্ষক মোস্তাফিজ শুধু একজন ব্যক্তি নয়, তার পক্ষে পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে একটা মহল। এ মহলের সাথে যুক্ত আছে ক্ষমতা, প্রশাসন ও নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। আমাদের এ লড়াইয়ে জিততে হবে। ন্যায়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য দানবের বিরুদ্ধে জিততে হবে। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবো।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট সিনেটর ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যে উদাসীনতা নতুন করে আবারো প্রমাণিত হলো মাদক ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায়। আমাদের এ আন্দোলনের মাধ্যমে যদি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষক, যৌন নিপীড়নের ঠাঁই নেই বলে প্রমাণ করে দিতে পারি, তাহলে আমরা দেশে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবো। বিশ্ববিদ্যালয় মাদকে সয়লাব অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অধিকতর উন্নয়নে টাকা পয়সা ভাগ-বাঁটোয়ারা করতে ব্যস্ত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অছাত্রদের বের করার নামে নন-এলোটেড শিক্ষার্থী ও যাদের রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ততা নেই তাদের বের করার চেষ্টা চালচ্ছে। প্রশাসন আমাদের এক ধরনের চোখে ধুলো দিচ্ছে। অথচ অনেক ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা একাই হলের একটি করে কক্ষ দখল করে রেখেছে।'
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে কারা সিট বাণিজ্য করছে তাদের খুঁজে বের করে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু সময় ঠিকই ফুরিয়ে যাচ্ছে অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন টালবাহানা শুরু করেছে। তারা অছাত্রদের বের করার নামে শুধু নন-এলোটেড শিক্ষার্থীদের বের করছে। বাকি অছাত্ররা হলে থাকছে।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ