জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে মোমবাতি প্রজ্বলন ও মৌন মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে নজরুল ভাস্কর্য পর্যন্ত মৌন মিছিল করেন ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে নজরুল ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে দ্রুততম সময়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক মুখছিদুল মমিন বলেন, গত ৫ তারিখের যে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, এতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ৩/৪ দিন হয়ে গেলেও প্রশাসনকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি। যদি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দাখিল দেরি হয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হয়, তাহলে আমরা সকল সাংবাদিকরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নিহার সরকার অংকুর বলেন, প্রশাসনের নীরবতা এবং আশ্রয় প্রশ্রয়ই বারবার এসব ঘটতে দিচ্ছে। এর সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ৫ তারিখের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং প্রক্টরেরও দায় আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি রাশেদুজ্জামান রনি বলেন, এ ঘটনার বিচার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। কোনো রকম ছলচাতুরী করা হলে সারা দেশের সাংবাদিক সংগঠনের সাথে সমন্বয় করে কঠোর আন্দোলন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের একটি কক্ষে সিট দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও মারামারিতে জড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ। এতে আহত হয় একাধিক শিক্ষার্থী। পরে বিকেল সাড়ে ৫টায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতাকর্মীদের অতর্কিত হামলার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব। এরপর সমিতির সভাপতি মো. ফাহাদ বিন সাঈদ তাকে উদ্ধার করতে আসলে তাকেও জয়ধ্বনি মঞ্চের সামনে বেধড়ক পেটানো হয়।
জানা যায়, হামলাকারীরা আবু নাঈম আব্দুল্লাহর অনুসারী। হামলা করেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী লুবন মোখলেস, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তুহীন (পূর্বে বহিষ্কৃত), রায়হান, চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক জাহানসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন। এসময় তাদের হাতে ছিল লাঠিসোটা ও রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র। আহত দুই সাংবাদিককে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যথার দান মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ