রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন ১০ তলা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের একাংশের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ শুরু হওয়ার আগেই ভবনের অন্য অংশে কাজ চলমান রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ার আগেই ভবনটিতে কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের ধসে পড়া অংশের কাজ বন্ধ আছে। তবে মূল ভবনের প্লাস্টারসহ ছোট ছোট কাজ করছেন শ্রমিকরা। ভবনের কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, ধসে পড়া অংশে কাজ করা নিষেধ। তবে অপরপাশে ১২০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে ভবনের ছাদ ধসে পড়ার ঘটনায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান সরকারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইমরুল হাসান।
তদন্ত না করেই কাজ শুরু করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, অনিয়মের ফলে ভবনের একটা অংশ ধসে পড়েছে। আমাদের কাছে এখন পুরো ভবনটিই ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে কাজ শুরু করলে যেকোনো সময় আবার বিপদ হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করবো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবার কাজ শুরু করতে। অন্যথায় আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটে সবার মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এখন কাজ শুরু করার আগে আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। যাতে আবার বড় কোনো বড় দুর্ঘটনা না ঘটে।
প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে বাড়িতে আছি। ধসে পড়া অংশের কাজ বন্ধ থাকার কথা। অন্য কাজ হয়তো চলতে পারে। আমি প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ধসে পড়া অংশের কাজ বন্ধ আছে। তবে প্লাস্টারের মতো ছোট ছোট কাজ হয়তো চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রতিবেদন জমা দিয়ে দিয়েছি। সাইটের সবকিছুই তদন্ত করে দেখা হবে।
এবিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক খন্দকার শাহরিয়ার রহমানকে একাধিকবার কল করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমি রাজশাহীর বাইরে আছি। কাজ শুরু হয়েছে কি না বলতে পারছি না। তবে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর করবো।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ১০ তলা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের একাংশের ছাদ ধসে পড়ে। এই ঘটনায় অন্তত ১০ জন নির্মাণশ্রমিক আহত হন।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ