সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ্য বইয়ে ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের ‘শরিফার গল্প’ নিয়ে সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া দেখানোয় চাকরি হারিয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। এ নিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহলে চলছে তুমুল সমালোচনা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সৃষ্ট সেই বিতর্কের বিষয় পর্যালোচনায় পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই কমিটি গঠনের বিষয়টি অবগত করে একটি পোস্ট করা হয় ‘Ministry of Education, bangladesh’ নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে। তাতে দেখা যায়, ১৫ লাইনের মধ্যে ৮টি বানান ভুল!
এর আগে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। ওই পোস্টের ৭ লাইনে তিনি ১০টি বানান ভুল করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পোস্টেও একই ভুল করা হয়েছে। পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘সপ্তম শ্রেনির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠ্য বইয়ে "মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা" অধ্যায়ের শরিফার গল্প নিয়ে উদ্ভূত আলোচনার প্রেক্ষিতে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)কে সহায়তা করার জন্যে গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্যবৃন্দ হলেন যথাক্রমে:
১। অধ্যাপক ড. আব্দুর রশীদ (আহবায়ক), উপাচার্য, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়;
২। মুফতি মাওলানা কাফিল উদ্দীন সরকার, গভর্ণর, ইসলামি ফাউন্ডেশন; র গভর্নর
৩। মোহাম্মদ মশিউজ্জামান, (সদস্য সচিব), বোর্ড সদস্য, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)
৪। ড. মোহাম্মদ আবদুল হালিম, পরিচালক, শিক্ষা ও গবেষনা ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৫। অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদূর রশিদ, অধ্যক্ষ, ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা।
এই বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামতের ভিত্তিতে উক্ত বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৯টি বানান ভুল পাওয়া গেছে। ভুল বানানগুলো হলো- শ্রেনির, জন্যে, আহবায়ক, গভর্ণর, ফাউন্ডেশন; র, গবেষনা, ইন্সটিটিউট, (এনসিটিবি)কে এবং আরও তিনটি বাক্যের শেষে দাঁড়ি ব্যবহার করা হয়নি।
অপরদিকে বানান ভুলের বিতর্কে পড়া পোস্টে শিক্ষক আসিফ মাহতাব লিখেছিলেন, ‘আমার কন্ট্রাক্ট যদি রিনিউ নাই করাহবে তাহলে আমাকে দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা মিটিং, কাররিকুলাম ডেভেলপমেন্টের কাজ কেন করানো হলো?
সবচে মজার বেপার হচ্ছে আমার কোর্স রিনিউ করা হয়নি ভালো কথা, তো আমাকে দিয়ে একটা ক্লাস কেন নোয়ানো হলো?
ইমেইল ডিএক্টিভেট করেছেন ভালো কথা, কিন্তু আমি তার আগের রাতেই প্রমান রাখার জন্য আমাদের অফিসিয়াল এমাইলস যেখানে আমাকে ক্লাস দাওয়াহ হয়েছে, কাজ করানো হয়েছে সব আরেকটি ইমেইল এ সেন্ড করি।’
পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তিনি ১০টির মতো বানান ও লেখা ভুল করেছেন। ভুল হওয়া বানানগুলো হলো- ‘করাহবে’, ‘ঘন্টার’, পর ‘ঘন্টা’, ‘কাররিকুলাম’, ‘সবচে’, ‘বেপার’, ‘নোয়ানো’, ‘প্রমান’, ‘এমাইলস’ ও ‘দাওয়াহ’।সম্প্রতি একটি শিক্ষা সেমিনারে পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাইয়ের অভিযোগ তোলেন মাহতাব। এ সময় তিনি সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের ৮০ টাকা দিয়ে বইটি বাজার থেকে কিনতে বলেন। পরে বইয়ের ট্রান্সজেন্ডারের গল্প থাকা দুটি পাতা ছিঁড়ে আবার দোকানে ফেরত দেওয়ার পরামর্শ দেন এই শিক্ষক।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ