'ডামি ভোটের নির্বাচনি খেলা' আয়োজন ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক রায়ের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) সংগঠনটি থেকে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ডামি নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে গণবিরোধী স্বৈরাচারী সরকারের প্রতি অনাস্থা জানানোর জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানানো হয়। এর পাশাপাশি ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে হয়রানি মামলার রায় অনতিবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান তারা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর থেকে আজ অবধি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে আয়োজিত কোনো পর্যায়ের নির্বাচনেই দেশের সাধারণ জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করে ছলে-বলে, কৌশলে, বিনা-ভোটে ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি, নির্যাতন ও অপশাসন চালিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। বিরোধী মতকে গুম, খুন ও গায়েবী মামলার মাধ্যমে দমন-পীড়ন করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য কিছু ক্ষমতাভোগী স্বার্থান্বেষী মহলকে অবারিত লুটপাটের সুযোগ দিয়ে সাধারণ জনগণের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
দেশবাসীকে ডামি নির্বাচনি খেলা বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও হয়েছে, রাষ্ট্রের মূল-ভিত্তি শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে লাগামছাড়া বৈদেশিক ঋণের ‘চটকদার উন্নয়ন’ এই স্বৈরশাসনের মূলনীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই। আসন্ন ‘ডামি ভোটের নির্বাচনি খেলা’ বর্জনের মাধ্যমে গণবিরোধী স্বৈরাচারী সরকারের প্রতি অনাস্থা জানানোর জন্য আমরা দেশবাসীকে আহ্বান জানাই।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ১ জানুয়ারি গ্রামীন টেলিকমের চেয়ারম্যান পদে থেকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের একটি মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ঢাকার একটি আদালত। উত্থাপিত অভিযোগগুলো দেওয়ানি চরিত্রের হলেও সরকারের পক্ষ থেকে ফৌজদারি মামলা দায়ের করায় এসব মামলাকে 'হয়রানিমূলক' হিসেবে বর্ণনা করছেন অধ্যাপক ইউনূসের আইনজীবী। দীর্ঘদিন যাবত ব্যাংক হিসাব তলব, তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানহানি করা হচ্ছে বিশ্বের বুকে রাষ্ট্রের মর্যাদা উঁচু করা জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে ক্রমাগত আক্রমণাত্মক ও অশোভন বক্তব্য প্রদান করা আর এই ‘তড়িঘড়ি রায়’ এক সূত্রে গাঁথা বলে আমরা মনে করি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সহ দেশপ্রেমিক সকল নাগরিকের বিরুদ্ধে হয়রানি মামলার রায় অনতিবিলম্বে বাতিলের পাশাপাশি সকল উদ্যেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে বিচারাঙ্গনকে ব্যবহার করার ঘটনা নতুন নয়। ইতিপূর্বে একইভাবে নানান সময়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ জিয়া পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সরকারের 'রাজনৈতিক অবিচারের' শিকার হয়েছেন। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার 'অপরাধে' দেড় লাখের অধিক মামলায় ৪০ লাখের বেশি বিএনপি কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। অধ্যাপক ড. ইউনূস সহ দেশপ্রেমিক সকল নাগরিকের বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে ও অনতিবিলম্বে এই হয়রানি মামলার রায় বাতিলের পাশাপাশি সকল উদ্যেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ