ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বশেমুরবিপ্রবিতে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, সেশনজট

প্রকাশনার সময়: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২:৫৪

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একযুগ পার করলেও সংকট যেন পিছু ছাড়ছে না গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টির ৩৩ টি বিভাগের মধ্যে বেশিরভাগ বিভাগেই তৈরি হয়েছে ভয়াবহ সেশনজট। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে না স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন পর্যন্ত আয়োজন করতে পারেনি কোনো সমাবর্তন।

বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি অন্যতম সমস্যা হলো সেশনজট। অনেক সময় দেখা যায়, সেশনজটের কারণে চার বছরের স্নাতক (সম্মান) শেষ করতে লেগে যায় প্রায় পাঁচ-ছয় এমনকি সাত বছর, যা একজন শিক্ষার্থীর জীবনে নিয়ে আসে হতাশা ও দুশ্চিন্তার ভাঁজ। ক্যারিয়ার ও চাকরিজীবনে সৃষ্টি করে নানা প্রতিবন্ধকতা।

বশেমুরবিপ্রবির কয়েকটি বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষা এই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও অধিকাংশ বিভাগে তীব্র সেশনজটের কারণে এ বছরে শেষ হচ্ছে না স্নাতক (সম্মান)। ফলে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায়, তুলতে পারছে না আবেদনের ফর্ম, পোহাতে হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতা। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ ও হতাশা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, করোনার কারণে এমনিতেও আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। এরপর একাডেমিক অসচেতনার জন্য অনার্স পাশ করতে আরও সময় লাগছে ফলে আমরা চাকরির বাজারে পিছিয়ে পড়ছি। এবছরই অনেকগুলো চাকরির সার্কুলারগুলোতে আমরা আবেদন করতে পারছি না। ফলে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই হতাশায় ভুগছে।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সালেহ আহমেদের সঙ্গে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছরও স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষা শেষ করতে পারছে না, তার মূল কারণ শিক্ষক সংকট। শিক্ষক আমাদের যা আছেন এর ভিতর থেকে অনেকেই উচ্চতা ডিগ্রির জন্য দেশের বাইরে গেছেন। উচ্চতা ডিগ্রি অর্জন এটা একটা শিক্ষকের অধিকার পাশাপাশি আমরাও চাই একটা শিক্ষক পিএইচডি বা উচ্চতা ডিগ্রি অর্জন করে আসুক। এ কারণেই চাই যে তারা পিএইচডি করলে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালো রিসার্চ পাবে।

তিনি আরও বলেন, এমন অনেক ডিপার্টমেন্ট আছে যেখানে ৮০-৯০% শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে আছেন। যার কারণে তোমাদের এই সেশন জটের মূল কারণ বলে মনে করি।

শিক্ষা ছুটিতে গিয়ে যারা নিয়মের মধ্যে ফিরে আসেনি তাদের সম্পর্কে বলেন, তাদের ব্যাপারে আমরা রীতিমতো ব্যবস্থা নিয়েছি, ইতিমধ্যেই আমাদের ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ৫ জন শিক্ষক অব্যাহতি চেয়েছেন।

উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, সেশনজটের একটা কারণ হতে পারে শিক্ষকদের সদিচ্ছার অভাব আরেকটা হতে পারে সব বিভাগে সমান সংখ্যক শিক্ষক নেই। কোনো কোনো বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক আছে আবার কোনো কোনো বিভাগে খুবই কম শিক্ষক আছে। যেসকল বিভাগে শিক্ষক কম আছে তারা হয়তো পিছিয়ে পড়ে থাকতে পারে আর যাদের পর্যাপ্ত শিক্ষক আছে তারা হয়তো এগিয়ে থাকতে পারে। এ ছাড়াও যেসকল শিক্ষকরা তৎপরতার সাথে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে তারা এগিয়ে আছে।

তিনি আরও বলেন, ৮০ % বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই, ফলে রেগুলার রুটিন মেনটেইন করে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া রিয়েলি ডিফিকাল্ট। ফলে পিছিয়ে পড়ছে এবং সেশনজট বাড়ছে।

তবে সেশনজট নিরসনের বিশেষ পরিকল্পনা জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, সেশনজট নিরসনে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ