ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দৃষ্টিনন্দন দুটি গেট পাচ্ছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশনার সময়: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:৩৬ | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:৪২

প্রতিষ্ঠার ১৮তম বছরে এসে দৃষ্টিনন্দন ২টি গেট পাচ্ছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। এরমধ্যেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গেট ২টি নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে গেটের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. জোবায়ের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আর্কিটেকচারাল ডিজাইনে দেখা যায়, দৃষ্টিনন্দন এই গেট ২টি হবে একই ডিজাইনের। প্রতিটি গেটের ওপরে বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। গেটের বাম ও ডান পাশে থাকবে পাঁচটি করে খণ্ডায়িত মোট ১০টি দেয়াল। বাম পাশের প্রথম দেয়ালে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। লোগোর নিচে থাকবে বাংলা ভাষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। ডান পাশের প্রথম দেয়ালে থাকবে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের রচিত 'কারার ওই লৌহ-কপাট' গানের ৯টি লাইন।

লাইনগুলো হলো- ওরে ও তরুণ ঈশান/বাজা তোর প্রলয় বিষাণ/ধ্বংস নিশান উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদি/কারার ঐ লৌহকপাট/ভেঙে ফেল কর রে লোপাট/ রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী/ ওরে ও তরুণ ঈশান/বাজা তোর প্রলয় বিষাণ/ধ্বংস নিশান উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদি। গেটের মাঝে থাকবে রাস্তা বিভাজক।

উভয়পাশেই থাকবে দারোয়ানদের জন্য ছোট কক্ষ। গেট ২টির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ফাস্ট গেট' নামে পরিচিত চেকপোস্ট সংলগ্ন স্থানে এবং অন্যটি 'সেকেন্ড গেট' নামে পরিচিত চেকপোস্ট সংবলিত স্থানে নির্মিত হবে। সদ্য নির্মিত সুগঠিত সীমানা প্রাচীরের সাথে দৃষ্টিনন্দন এই গেট ২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করবে।

এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. জোবায়ের হোসেন বলেন, উপাচার্য মহোদয়ের নির্দেশনায় ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইটি প্রধান গেট নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে কাজ শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি।

আনন্দ প্রকাশ করে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ (স্নাতক) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান বাপ্পী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘সিম্বলিক’ নিদর্শন। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বতা ও স্বকীয়তা বহন করে এটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি ও আবেগের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে প্রধান গেট। ১৭ বছর ধরে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশে কোনো গেট নেই। একটি গেট আছে যা ক্যাম্পাস থেকে অনেক দূরে। এটি আমাদের জন্য একটি অপূর্ণতা ছিল।

তিনি আরও বলেন, এত বছর পর সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারদিকে দৃশ্যমান বেষ্টনী এবং গেট নির্মাণের কাজ হাতে নেয়ায় উপাচার্য স্যারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রত্যাশা করছি কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই গেট ২টি দ্রুততম সময়ে দৃশ্যমান হবে।

স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, উপাচার্য স্যারের উদ্যোগে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম সংবলিত অত্যন্ত নান্দনিক নকশায় দুটি গেটের কাজ শুরু হচ্ছে। এ জন্য উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর স্যারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এ গেটের কাজ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা আরও জোরদার হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ আরও নিরাপদ পরিবেশে বিচরণ করতে পারবেন। এ ছাড়াও গেটগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করবে। উপাচার্য স্যারের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের গতি অব্যাহত থাকবে এই প্রত্যাশা করছি।

প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত নানাবিধ কর্মকাণ্ড এড়াতে প্রবেশমুখে গেটের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা জোরদারে প্রবেশ মুখে দৃষ্টিনন্দন দুটি গেটের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা আন্তরিকতা দিয়ে চেষ্টা করছি, ২টি গেট করতে এবং আগের তুলনায় দৃষ্টিনন্দন করতে। আমরা ২টি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছি। আমরা আশা করছি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদের গেটের কাজ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে এবং দ্রুততম সময়ে আমরা গেটের কাজ শুরু করতে পারবো। আমরা ক্যাম্পাসকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অভয়ারণ্য ও নন্দনকানন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। নিরাপত্তা জোরদারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নান্দনিক পরিবেশ তৈরি করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। সেদিক থেকে ২টি গেট নির্মাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চারিদিকে সীমানা প্রাচীর দিয়েছি। গেট ২টি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা আরো সুসংগঠিত হবে। অতীতে যদি মাদক, অপরাজনীতি ও দুর্বৃত্তায়ন থেকেও থাকে সেগুলো নির্মুল করার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন স্থানে একটি প্রধান গেট আছে। তবে দূরে হওয়ায় গেটটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন। এতে দেখা দিয়েছিল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গেটের অপূর্ণতা। নতুন ২টি গেট এই অপূর্ণতার অবসান ঘটাবে বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ