প্রাচীনকাল থেকে বাঙালিরা নিজস্ব শিল্পকর্মে সমৃদ্ধ। তবে সময়ের সাথে সাথে এসব শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। আদিম বংশধরদের সংস্কৃতি রক্ষায় অনেকে এসব শিল্প ধরে রাখলেও এর পরিমাণ অনেক নগণ্য।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ বিনা খরচে বিভিন্ন ব্যবহৃত জিনিসপত্র রিসাইকেল করে ও মাটি দিয়ে তৈরি করেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল একাডেমিক ভবনের সামনে বেলা ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চলে এ প্রদর্শনী যা মুগ্ধ করেছে বিভাগটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের।
জানা যায়, বিভাগের প্রভাষক ইমতিয়াজ ইসলাম ও তানিয়া আফরোজের নির্দেশনায় বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের পার্শবর্তী হরিনারায়ণপুর কুমার পাড়ায় গিয়ে এসব শিল্প তৈরি করেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাঙালির শিল্পকর্ম সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরে। নিজেদের হাতে এমন কাজ করতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা উচ্ছাস প্রকাশ করে বলেন, আমরা প্রথম এই ধরনের কাজ করছি। আমরা অনেক আনন্দিত। বর্তমানে আমাদের লোকশিল্পগুলো বিলুপ্তপ্রায়। সেই সংস্কৃতিকে মানুষের মাঝে ফুটিয়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।
বইয়ের ভাষায় মুখস্থ করার চেয়ে হাতে কলমে দেখতে পেয়ে খুশি দর্শনার্থীরা। চারুকলা বিভাগ এ রকম আরো নতুন নতুন শিল্প তৈরি করবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
পরিদর্শন করতে এসে পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, অব্যবহৃত জিনিস দিয়ে নবীন শিক্ষার্থীরা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে এটা দেখে আমরা অভিভূত। আমি মনে করি সামনে তারা আরো ভালো করবে এবং এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মাত্রায় পৌঁছে দিবে।
চারুকলা বিভাগের প্রভাষক ইমতিয়াজ ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি এর মাধ্যমে বাঙালি লোকশিল্পকে তুলে ধরতে। আমরা যেহেতু মাটি কেন্দ্রীক কৃষিজীবী মানুষ সেই তাড়না থেকেই আমাদের এই উদ্দ্যোগ। আমরা চেয়েছিলাম স্থানীয় কুমারদের জীবন সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা জানুক তাদের সাথে মিশে কাজ করুক। যেহেতু গ্যালারি নেই তাই উন্মুক্ত প্রদর্শনী করা। এই কাজটি করতে পেরে আমি বেশ খুশি।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম বলেন, আমি বিভাগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে দেখে আসছি, এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা নতুন, সৃষ্টিশীল বিভিন্ন কাজ করে আসছে। এখানে আমি বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্যর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখতে পারছি। এখানে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা তাদের বৈচিত্র্যময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যগুলো ফুটিয়ে তুলছে। তারা কিন্তু এটি বিভাগের কোনো অর্থায়নে করছে। আমাদের এসব কর্মকাণ্ডকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ