ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাবিতে গাছ কাটার প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ

প্রকাশনার সময়: ০২ নভেম্বর ২০২৩, ২২:১৭

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রাতের আঁধারে প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ কাটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া গাছ কাটার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পাশে সুন্দরবন নামক স্থানে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর দুপুর বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন একদল শিক্ষার্থী।

মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা নতুন প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে দুপুর সোয়া দুইটার দিকে তালা খুলে দিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে আলাপ করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় গাছ কাটার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করাসহ তিনদফা দাবি জানান তারা।

তাদের অন্য দু’টি দাবি হলো- ক্যাম্পাসে প্রাকৃতিক পরিবেশে পরিবর্তন আনানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে উন্মুক্ত মতবিনিময়ের আয়োজন করা এবং যেকোনো ধরণের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে যেখানে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেখানে অবশ্যই আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী এনভায়রনমেন্টাল সার্ভে এবং এনভায়রনমেন্টাল ইম্পেক্ট এসেসমেন্ট নিশ্চিত করা। এর মধ্যে, প্রথম দাবি আগামী তিন দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করার আল্টিমেটাম দেন তারা।

গাছ কাটার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবগত নয় বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড.নূরুল আলম। তিনি বলেন,' গাছ কারা কেটেছে এ বিষয়টি আমি জানি না। আমার অনুমতি নেওয়া হয়নি, আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় আমি বলেছিলাম গাছ না কেটে ভবন করতে।'

গাছ কাটার ঘটনা না জানা উপাচার্য হিসেবে আপনার ব্যর্থতা কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি তা মনে করি না। আমি আইবিএ ইনস্টিটিউটের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানাবো। অনিক ট্রেডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কেটে নিয়ে গেছে। তাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো চুক্তি হয়নি। আগামী ১৩ তারিখ সিন্ডিকেটে আমরা বিষয়টি আলোচনা করবো।'

সিন্ডিকেটে আলোচনার আশ্বাস দেওয়ার পরও আন্দোলনকারীরা অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখে। এরপর বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ফের আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলতে আসেন উপাচার্য। এ সময় গাছ কাটার ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে আন্দোলনকারীদের জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু হাসান। তখন রাতের আঁধারে গাছ কাটার বিষয়ে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিচালকের বক্তব্য চান আন্দোলনকারীরা।

এ ছাড়া বক্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। তবে তদন্ত কমিটি গঠিত হওয়ায় ওই বিষয়ে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিচালক অধ্যাপক কে এম জাহিদুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার ভোর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পাশ্ববর্তী এলাকার সুন্দরবন নামক স্থানে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ভবন নির্মাণের জন্য ইলেকট্রনিক মেশিন ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতির অর্ধশতাধিক গাছ কাটা হয়। পরে গাছের প্রধান অংশগুলো ট্রাকে করে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ