প্রথম কমিটির প্রায় ছয় বছর পর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছাত্রলীগের দ্বিতীয় কমিটির অনুমোদন দিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। দীর্ঘদিন পর কমিটি পেয়ে খুশি ছাত্রলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
গত ১৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নাঈম রহমানকে সভাপতি এবং জাহিদ হাসান শুভকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কাজকে গতিশীল করতে কার্যক্রম শুরু করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত এই নেতারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ সময় পর ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ায় নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন তারা।
ছাত্রলীগ কর্মীদের সাংগঠনিক কাজে অন্তর্ভুক্তিকরণ
প্রথম কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বড় বড় পাঁচটি গ্রুপকে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়। এদের মধ্যে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে দুজন আসায় বাকি ছাত্রলীগ নেতারা ক্যাম্পাসে সরাসরি রাজনীতি করবে না এমনটাই শোনা যাচ্ছে। সকল ছাত্রলীগ কর্মীদের এক সাথে করে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা এই নেতৃত্বে আসা নেতাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই ধরা হয়।শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিতে ভূমিকা
ক্লাস রুম সংকট, ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধি, খাবারের উচ্চমূল্য, বাস সংকট, মানসম্মত ক্যাফেটেরিয়া তৈরি করা, ঝুকিপূর্ণ সড়ক মেরামত, মুক্তমঞ্চ তৈরিসহ নানা দাবিতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সাংগঠনিক কাঠামো না থাকায় শিক্ষার্থীদের সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। দীর্ঘ সময় পর ছাত্রলীগের কমিটি আসায় দাবি আদায়ের স্বপ্ন দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নেতৃত্বে আসা ছাত্রলীগের নেতাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলে তাদের অধিকার নিশ্চিত করা।ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা
নতুন দায়িত্ব আসা নেতাদের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ মনে করা হয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। ক্যাম্পাসে নতুন আসা শিক্ষার্থীদের নানা সময় হেনস্তার স্বীকার হতে দেখা যায়। কমিটি আসার আগেই এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন অবস্থানে দেখা গিয়েছে নোবিপ্রবি ছাত্রলীগকে। বর্তমানেও সেই একই পরিবেশ বজায় রাখবে এমনটাই আশা সাধারণ শিক্ষার্থীদের।মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তোলা ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস গঠন ছাত্রলীগের আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। মাদকের বিধ্বংসী আগ্রাসন থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করে একটি সুন্দর শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলা ছাত্রলীগের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে গতিশীল করাও তাদের বড় চ্যালেঞ্জ। ছাত্রলীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ধারণা দীর্ঘ দিন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কাঠামো না থাকায় বিরোধী সংগঠনের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সামনে হল এবং অনুষদ ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া এখন তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
এ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসা নতুন নেতারা। সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান শুভ নয়া শতাব্দীকে বলেন, ছাত্রলীগ বড় ছাত্র সংগঠন হওয়ায় এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতাও বেশি ছিল। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আমাদের যোগ্য মনে করায় আমরা দায়িত্ব পেয়েছি। আমরা ছাত্রলীগের সকল কর্মীকে নিয়ে কাজ করব এবং যে একদিনের জন্যও ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছে আমরা তাদের নিয়েও কাজ করবো পাশাপাশি আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সর্বদা পাশে থাকব। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার সাথে সাথেই এই বিষয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে আমরা তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করব। শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা শুনবো এবং হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করব।
মাদক নির্মূল করে নোবিপ্রবিকে একটি শিক্ষার্থীবান্ধন ক্যাম্পাসে পরিণত করার কথা বলেন নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি নাঈম রহমান। তিনি জানান, মাদক ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় শত্রু। ক্যাম্পাস থেকে মাদক নির্মূলে আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বৃদ্ধির বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে হল এবং অনুষদভিত্তিক কমিটি দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করব। কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদনক্রমে সম্মেলনের মাধ্যমে সব কমিটি দেওয়া হবে। যাতে করে নোবিপ্রবি ছাত্রলীগ নোয়াখালীতে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে পারে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে নোবিপ্রবি ছাত্রলীগ সব সময়ের মতো তাদের পাশে থাকবে।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ