পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত সম্পর্কের খাতিরে মাস্টাররোলের চার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রতি মাসে ৪৫ দিনের বেতন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্য মতে, পবিপ্রবির বিভিন্ন দফতরের ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মাস্টাররোলে কর্মরত রয়েছেন। তাদের সকলের মাসিক বেতনের হিসাব ৩০ দিনের হলেও চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী একদিন অফিস করে বেতন পান দেড় দিনের অর্থাৎ একমাস অফিস করে ৪৫ দিনের বেতন নিচ্ছেন।
জানা যায়, প্রায় এক যুগ ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টাররোলে চাকরি করলেও বর্তমান প্রশাসন তাদেরকে অধিক বেতন দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তাদেরকে বেশি বেতন দিচ্ছেন। আরও অভিযোগ রয়েছে, এসব অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাসে দশ দিনও অফিসে উপস্থিত থাকেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, আয়শা সিদ্দিকা, মো. শামসুল হক (রাসেল), মো. সুমন হোসেন, নাসরিন আক্তার অতিরিক্ত বেতন পাচ্ছেন।
আয়শা সিদ্দিকা কর্মকর্তা পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাদলের স্ত্রী। এ ছাড়াও রয়েছেন রেজিস্ট্রার অফিসের সংস্থাপন শাখার মো. শামসুল হক (রাসেল), শিক্ষা ও বৃত্তি শাখার নাসরিন আক্তার এবং পরিবহন শাখার ড্রাইভার মো. সুমন হোসেন।
অন্তত ১০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন, এই চারজনকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে এ অবৈধ নিয়মের চালু করেছিলেন। অনতিবিলম্বে এই নিয়ম বাতিল করা হোক এবং অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়া হোক। এদের অনেকেই বিশেষ সুবিধা পাওয়ার ফলে সিনিয়র অনেক অধ্যাপকের সাথে খারাপ ব্যবহার করছেন। এমনকি সিনিয়র এক শিক্ষকদের গায়ে হাত দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে মো. শামসুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ক্যাম্পাসের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টাররোলে কাজ করছি। প্রশাসন ভালো মনে করেই অতিরিক্ত বেতন দিচ্ছে। নিয়মিত অফিস না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সিনিয়র কর্মকর্তা আছে, এ বিষয় তারা দেখবেন।
আয়শা সিদ্দিকার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে আমাদেরকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এজন্য আমরা বেতন বেশি পাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসুকে কয়েকবার ফোন দিলে তিনি ফোন ধরে বিরক্ত দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, ওই চারজন নির্ধারিত আট ঘণ্টার পরে অতিরিক্ত সময় কাজ করেন তাই তাদেরকে বেশি বেতন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়েও তারা অফিস করেন না, অতিরিক্ত কাজ কিভাবে করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা করলে তারা বেতন পাবে না। বিভিন্ন কারণে তাদের চাকরি স্থায়ী হয়নি তাই সিম্প্যাথি থেকে তাদেরকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
নয়া শতাব্দী/এসএ/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ