‘আমাদের ভিসি ‘ওয়ান-এলেভেনের’ পরীক্ষিত নেতা। এরকম ভিসি থাকার পরেও কেন আপনারা হলের নেত্রীদেরকে কোনঠাসা করতে চাচ্ছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি নাই তাই? এই সরকারের সময়ে কি কোনো নিয়োগই নাই বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টরিয়াল বডি, প্রক্টর, ভিসি-প্রোভিসি আপনারা তো সবাই আছেন। আপনারা এসব নিয়ে কথা বলছেন না কেন। আপনারা যদি আমাদের পাশে না থাকেন, তাহলে আপনাদেরকে আওয়ামী পরিষদের শিক্ষক হিসেবে তো নিয়োগ দেওয়াটাই শেখ হাসিনার ভুল সিদ্ধান্ত।’
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে এমন মন্তব্য করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা শশী। এটি দ্রুত ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। নানা আলোচনা-সমালোচনার পরে তিনি লাইভটি সরিয়ে নেন।
এ বিষয়ে জানতে ফারজানা শশীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে রহমতুন্নেছা হল ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না আক্তার তন্বীর ছাত্রত্ব শেষ হওয়ায় অবৈধভাবে হলে অবস্থান করায় তাকে কক্ষ ত্যাগ করার নির্দেশ দেন হল প্রশাসন। কিন্তু নির্দেশনা অমান্য করে পরদিন বিকালে উল্টো হল গেটে তালা দেন তামান্না ও অন্যান্য হল ছাত্রলীগের নেত্রীরা। এছাড়া গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ঐশী নামে এক ছাত্রলীগ নেত্রীর রুম সিলগালা করেছে হল প্রশাসন। এসব বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করায় ফারজানা শশী সাংবাদিকদের নিয়ে লাইভে এসে এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ফারজানা শশী বলেন, ‘বিগত কয়েকদিন ধরে দেখছি, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি চ্যানেল ও অনলাইন পোর্টালসহ সব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে নিউজ দেখা যাচ্ছে। নিউজে এত লাল-নীল-হলুদ রংঢং দিয়ে সাংবাদিকতা করা উচিত নয়। আপনারা ছাত্রলীগ নেত্রীদের হলে সাম্রাজ্য দ্বারা কী বুঝাচ্ছেন? সাংবাদিকতা করবেন স্মার্ট সাংবাদিকতা করেন। ছাত্রলীগের ট্যাগ লাগাতে পারলেই আপনাদের নিউজ হিট। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা যেভাবে আমাদের পেছনে লেগে পড়েছে, এখন হাঁটতেও ভয় লাগে। একটা যে লিপস্টিক দেব, সেটা দিতেও ভয় হয়। লিপস্টিক দিলেও বলবেন, এই নেত্রীর টাকার উৎস কোথায়। তার মানে কি আমার মা-বাবা নাই। একটা লিপস্টিক কিনে দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমার পিতা-মাতার নাই। লিপস্টিক বেশি দিলে আবার ব্র্যান্ড খুঁজবেন। সাংবাদিকরা কখন কী নিউজ করে দেয়, এ ভয়ে মানুষের সঙ্গে একটু জোরে কথা পর্যন্ত বলি না। তাহলে ছাত্রলীগ কি ক্ষতি করলো?
যে দলই ক্ষমতাই থাকে তারা একটু সুবিধা পায় উল্লেখ করে ফারজানা বলেন, ‘আপনারা যাকে নিয়ে কথা বলছেন, সে ওই হলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। ছাত্রদলের এমন অনেক শিক্ষার্থী ছিল যাদের ছাত্রত্ব ছিল না। তাও বছরের পর বছর হলে থেকেছে এবং অরাজকতা করেছে। জাসদ, বাসস, ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্রশিবির বলেন যারা নেতৃত্বে থাকে তারা একটু সুযোগ-সুবিধা পায়। আর যেখানে আমাদের সরকার এখনো ক্ষমতায় আছেন। যে দলই যখনই ক্ষমতায় থাকুক, তারা একটু সুবিধা পায়ই। এটা স্বাভাবিক।’
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ