ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

৭ বছর পর রাবি ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলন, কমিটি বিলুপ্ত

প্রকাশনার সময়: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৩৭

দীর্ঘ প্রায় সাত বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের ২৬তম বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

বিকেল সাড়ে চারটায় প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এ সময় পুরাতন কমিটির বিলুপ্তি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদক।

এদিন দুপুর একটার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা ও ছাত্রলীগের দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।

সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাতে পড়ে বিশ্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। বাংলাদেশকে দেখে উন্নত অনেক দেশ ঈর্ষা করে এবং শেখ হাসিনাকে সহজে মেনে নিতে চায় না। বর্তমানে আমরা প্রায় অর্ধেক ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপির কাছাকাছি পৌঁছেছি। শেখ হাসিনা বলেছেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে অন্ততপক্ষে এক ট্রিলিয়ন ডলারের জিডিপিতে উন্নত করবেন। বর্তমানে স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন এবং নারীর ক্ষমতায়নে আমাদের দেশ এতোটাই উন্নতি করেছে যে আশপাশের দেশ আমাদের দেখে ঈর্ষান্বিত হয়। মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা বাংলাদেশকে একটি সুন্দর জায়গায় নিয়ে গেছেন।

সম্মেলনে পদ প্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে রাসিক মেয়র আরও বলেন, আজকে এখানে অনেক পদপ্রার্থী আছে। কিন্তু সবাইকে নেতা নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে আলোচনা করে ঠিক করবে। যারাই নেতা হোক, সবাই মিলেমিশে কাজ করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, রাজশাহীতে ছাত্রলীগ করা আর মরুভূমিতে ফুলের বাগান করা একই কথা। এ সময় তিনি কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের উৎসর্গটা দেখে তাদের যোগ্যতাটা যেন বিবেচনা করা হয়। ছাত্রনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরও বলেন, এমন নেতা হওয়ার চিন্তা করবেন না যেন আপনার আচরণে কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী কষ্ট পায়।

অনুষ্ঠানের বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, হলের ছাত্রদের আবাসন সমস্যাকে পুঁজি করে ছাত্র রাজনীতি করা ছাত্রলীগের কাজ না। আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা যেন সুন্দর পরিবেশে থাকতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। মিছিল মিটিংয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের নতুনত্ব নিয়ে আসতে হবে। রাজনীতি মানে শুধু কয়েকটি পদ নয়। রাজনীতি মানে মননশীল চর্চা। রাজনীতি করে সমস্যা তৈরি না করে বরং সমস্যার সমাধান করতে হবে। তবে মাঝে মাঝে সংবাদ পত্রে দেখি সিট বানিজ্য, ভর্তি জালিয়াতির সাথে ছাত্রনেতারা জড়িত থাকে যা আমার মনে কষ্ট দেয়। এখানে যারা রাবির নেতৃত্বে আসবে তারা যেন সিট বানিজ্য দূর করে শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে সহযোগিতা করে। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।

প্রধান বক্তা হিসেবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, ছাত্রলীগের ভাইদের রক্তে রঞ্জিত এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে মৌলবাদীদের আশ্রয় দেওয়া যাবে না। আজকের দিনে রাবিতে শিবিরের টর্চার থেকে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ছাত্রলীগের ভাইয়েরা। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিবে তারা যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে। যারা দায়িত্ব পাবেন না তারা দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন। রাজশাহীর মাটিকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের চেতনায় গড়ে তুলতে সবাই একসাথে কাজ করব।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর সঞ্চালনায় সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা। বিশেষ বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন রনি, উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক মো. সাব্বির হোসেন, সহ-সম্পাদক আদনান হোসেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম প্রমুখ।

নয়া শতাব্দী/এসএ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ