পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বরিশাল ক্যাম্পাসের (বাবুগঞ্জ) অন্তর্গত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হলের বেহাল দশায় তীব্র ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা।
পবিপ্রবি বাবুগঞ্জ ক্যাম্পাসে এনিম্যাল সায়েন্স ও ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের দুইটি ডিসিপ্লিন ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন( ডিভিএম) এবং এনিম্যাল হাজবেন্ড্রী বিষয়ে পাঠদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা দিতে এই ক্যাম্পাসে দুইটি হল বীরশ্রেষ্ট ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হল ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল রয়েছে। তবে ছাত্রদের সিট সংকট ভোগান্তি নিরসনে হলের সাথে বেশ কিছু বিল্ডিং যুক্ত করা হয়েছে, যা পূর্বে কর্মকর্তা -কর্মচারীদের বাসভবন ছিল। এই বিল্ডিংগুলো হল- ১ নং বিল্ডিং, ২নং বিল্ডিং এবং ৪নং বিল্ডিং।
তন্মধ্যে, ২নং বিল্ডিংয়ের ভয়াবহ অবস্থার বিষয় পরিলক্ষিত হয়েছে। সেখানে থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিবেশ নেই বললেই চলে। ভবনের ২য় তলায় দেখা যায় উপরের ছাদ ফেটে পানি পড়ার দৃশ্য। এই অবস্থা মোকাবিলা করতে এক শিক্ষার্থীকে মশারির উপর পলিথিনের সেফটি দিতে দেখা যায়, যার ছবি নিয়ে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টি সংশ্লিষ্ট ফেসবুক গ্রুপে ব্যপক সমালোচনা হয়। ভবনটির বিদ্যুৎ, পানি ও হাটার পরিবেশ যথেষ্ট না।
সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করে দেখা যায়, অনুষদের ডিন ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও শিক্ষার্থীদের নতুন কোনো সিটের ব্যবস্থা করা হয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের উপর চরম অমানবিক বলেই মনে করছে ভবনের শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশের যে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শতভাগ হল সুবিধা প্রদান করে তার মাঝে পবিপ্রবি অন্যতম। তবে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হলের এই বেহাল দশা রেখেই কি তবে পবিপ্রবি হল সুবিধায় স্বয়ংসম্পূর্ণ? এই প্রশ্নই শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, অনুষদের ডরমেটরি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ২নং বিল্ডিংকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও সিটের ব্যবস্থা করা হয়নি। ডরমিটরিতে ২নং বিল্ডিং এর সকল শিক্ষার্থীকে স্থানান্তর করার অনুরোধ রইল কর্তৃপক্ষের কাছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেনারি মেডিসিন অনুষদের ২০১৪-১৫ বর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ সজীব বলেন, বাবুগঞ্জ ক্যাম্পাসের ২নং ভবনটি বসবাসের একদমই অনুপযুক্ত। ছাদের পানি পড়ার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়েও একাধিক সমস্যা আছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. এনামুল হক কায়েস জানান, ২নং ভবনের বেহাল দশার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ বসবাসের অনুপযোগী হিসেবে রিপোর্ট দিয়েছিল, পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ একে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তাই শিক্ষার্থীদের সেই স্থান ত্যাগের জন্য বলা হয়েছে।
পরিত্যক্ত ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার সমাধানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখানে আবাসন ব্যবস্থা সন্তোষজনক নয়, ৩০০ টি সিটে ৫০০ জন শিক্ষার্থীকে থাকতে হয়। বর্তমানে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে নতুন হল নির্মাণে কথা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পবিপ্রবি বাবুগঞ্জ ক্যাম্পাসটি দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। তন্মধ্যে, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর হলের ভোগান্তিতে শীর্ষে রয়েছে। বৃষ্টির সময় হলের রাস্তাগুলো পানি হাঁটু পর্যন্ত উঠে যায়, প্রতি মঙ্গলবার অনলাইন ক্লাস থাকলেও হলের অধিকাংশ ভবনে পর্যাপ্ত ওয়াইফাই সুবিধা দিতে পারেনি হল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থীদের রিডিং রুম নেই, কোনো ইনডোর গেমিং রুম নেই, প্রায় প্রতিটি রুমেই ফ্যান লাইট অকেজো, ডাইনিং এর খাবারের বেহাল দশা, ওয়াশরুমের সমস্যা সহ বিপুল সমস্যায় ভোগান্তিতে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ