মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে রোববার (১৬ জুলাই) থেকে মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে শিক্ষকদের ১০টি সংগঠন।
শিক্ষকদের দাবি, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এক হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসবভাতা এবং ৫শ টাকা চিকিৎসাভাতা পাই। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।
সরকার থেকে জাতীয়করণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তারা রাস্তা ছাড়বেন না। তবে, এক্ষেত্রে একেবারেই ‘নিশ্চুপ’ রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত সচিব আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসাইন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষকদের অবস্থানের বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় অবগত আছেন। তবে মন্ত্রী মহোদয় এ মুহূর্তে ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন। তাই কিছু বলতে পারছি না’।
বিষয়টি জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে সচিবের একান্ত সচিব মো. জাকির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সচিব মহোদয় গত দুদিন ধরে অসুস্থ। আমি নিজেও স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না’।
এর আগে শুক্রবার (১৩ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে রোববার (১৬ জুলাই) থেকে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালাবন্ধ রাখার ঘোষণা দেন বিটিএ’র সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া।
গত ১১ জুলাই থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। শনিবার চতুর্থ দিন শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এর আগে, শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে শনিবার সকাল থেকে সারাদেশের সব শিক্ষক-কর্মচারী ঢাকায় আসবেন বলে ঘোষণা করা হয়।
বিটিএ সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবো। আমরা পুলিশের সাথে কথা বলেছি। তাদের অবগত করেছি কর্মসূচির বিষয়ে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এ আন্দোলনের সরকারের বিরুদ্ধে নয়। সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল-স্লোগান দিতে আমরা এখানে আসিনি। আমরা জাতীয়করণের দাবিতে এসেছি। আমাদের দাবি আদায় হলে আমরা স্কুলে ফিরে যাব।’
বিটিএ সভাপতি বজলুর রহমান মিয়া বলেন, ‘আমরা গত ১১ জুলাই থেকে এখানে অবস্থান করছি। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে চাই। দাবি আদায় হলে এক সেকেন্ডও দেরি করবো না আমরা। দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরবো না।’
এর আগে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আগে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দিলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষকরা।
নয়াশতাব্দী/এমটি
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ