প্রাণঘাতি করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আগামী রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) উচ্চপর্যায়ের সভা ডাকা হয়েছে। কবে থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে তা ওই বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, জাতীয় পরামর্শক কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী আজ বুধবার শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে থেকে খোলা হবে তা আগামী ৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। স্কুল-কলেজ খোলার পর কী কী করণীয় হবে সেসব বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ও খোলার পর দীর্ঘদিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পরিকল্পনা চূড়ান্তকরণ, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও অনুসরণ পদ্ধতি প্রণয়ন, এসএসসি-এইচএসসি সমমান পরীক্ষাগুলো দ্রুত সম্পন্ন করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় পর্যায়ের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে জাতীয় পরামর্শক কমিটি মতামত দিয়েছে। বর্তমানে এ হার ১২ শতাংশে নেমেছে। কয়েকদিনের মধ্যে তা ১০ শতাংশে নেমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে সংক্রমণ ৭-৮ শতাংশে নামলে স্কুল-কলেজ খোলার চিন্তা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে আগের ঘোষণা অনুযায়ী চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয়দিন করে ক্লাস নেওয়া হবে। আর প্রথম ধাপে অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের একদিন করে ক্লাস নেওয়া হবে। একটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের তিনটি কক্ষে বসানো হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে তাদের সপ্তাহে দুইদিন করে ক্লাস নেওয়া হবে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের ছুটি বৃদ্ধি করে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হবে। ১ অক্টোবর থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে।
এদিকে গত ২৬ আগস্ট আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা যেতে পারে। তার আগে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন তার তথ্য ছক আকারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাঠাতে হবে। তার মধ্যে কতজন টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, আর কতজন প্রথম ডোজ নিয়েছেন, আবাসিক হলের কতজন শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছেন এ সংক্রান্ত তথ্য ইউজিসিতে পাঠাতে হবে। এরপর চলতি সপ্তাহে ইউজিসি থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দিয়ে পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশিদিন বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। স্কুল-কলেজ ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের চাপ রয়েছে, খুললেও করোনা আক্রান্তের আশঙ্কা রয়েছে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চাই। সেজন্য আগামী সপ্তাহের শুরুতে জাতীয় পরামর্শক কমিটির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ