কৃষক বাবার সন্তান হাবিবুর রহমান। পিতা আব্দুস সামাদ এবং মাতা হেলেনা খাতুন। চার ভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট তিনি। জন্ম থেকেই দু’হাত নেই। পা দিয়ে লিখেই দাখিল, আলিমের গন্ডি পেরিয়েছেন। অংশ নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধে। সকল প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে হতে চান বড় আলেম।
হাবিবুর রহমানের বাড়ি কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হিমায়েতখালী গ্রামে। ছোট বেলা থেকে হাবিব পড়ালেখার প্রতি আগ্রহী। মা-বাবা, চাচা-চাচিদের অনুপ্রেরণায় পড়ালেখা চালিয়ে যান।
প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষায় পেয়েছিলেন জিপিএ-৪.৬৭। শুরু করেন মাধ্যমিক শিক্ষাজীবন। পাংশা পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পান জিপিএ-৪.৬১। একই মাদ্রাসা থেকে ২০১৯ সালে দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪.৬৩ পান হাবিব। এরপর শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় আলিমে ভর্তি হন। এরপর ২০২৩ সালে আলিম পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৫৭ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সোমবার (৫ জুন) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ‘ডি’ ইউনিটের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। এর আগে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
হাবিবুর বলেন, ‘আলিম পরীক্ষার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার স্বপ্ন জাগে। পরিবারের অনুপ্রেরণা পেয়েই আমি আজ এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছি। কখনও প্রতিবন্ধকতার হেয় শিকার হতে হয় নি। সবাই ভালোভাবে নিয়েছে। আমি বড় আলেম হতে চাই।’
প্রতিবন্ধকতার শিকার অন্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছেশক্তি থাকলে সবকিছু সম্ভব। চেষ্টা করলেই আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিবেন। চেষ্টা না করলে আসলে কোনও কিছু সম্ভব না। সবাইকে চেষ্টা করা উচিত। কষ্ট হবে, বিপদ আসবে। এর মাধ্যমে জয় করতে হবে। চেষ্টা না করলে কোন কিছুই সম্ভব নয়।’
তার প্রতিবেশী আজমল হোসেন বলেন, ‘ছেলে আমার সম্পর্কে ভাতিজা হয়। শারীরিক গঠনে অন্য আট-দশজন ছেলের মতো না হলেও কোনও দিক হতে পিছিয়ে নেই। ছোট থেকেই অনেক মেধাবী সে।’
নয়াশতাব্দী/এমটি
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ