‘রিকশাচালকদের চিকিৎসা ডেল্টা মেডিকেলে হয় না। চিকিৎসা করালে টাকা দেবে কে? সরকারি মেডিকেলে নিয়ে যান’। শনিবার (০৩ জুন) সকালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক রিকশাচালককে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে এসব কথা বলেন হাসপাতালটির দায়িত্বরত চিকিৎসক। এই ঘটনার ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

জানা গেছে, আজ শনিবার সকালে সরকারি বাঙলা কলেজের ছাত্র সোলায়মান খান রিকশাযোগে মিরপুর-১ নম্বর যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আনসার ক্যাম্পে রবরব (গাড়ির নম্বর- ঢাকা মেট্রো- ব -১১-৭০০১) পরিবহনের একটি বাস রিকশাটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে রিকশাচালক ও যাত্রী সোলায়মান ছিটকে পড়ে যায়। এ সময় রিকশাচালকের পা বাসের চাকার নিচে পড়ে। ঘটনা দেখে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে গাড়ি থামায় এবং দুই জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাসপাতালে নিয়ে গেলে রিকশাচালক জামালকে (৩৫) দায়িত্বরত চিকিৎসক জিজ্ঞেস করেন ‘উনি কী করেন?’ এরপর ‘রিকশাচালক’ জানালে ওই চিকিৎসক জানান, এই হাসপাতালে রিকশাচালকদের চিকিৎসা হয় না। ওনাকে সরকারি মেডিকেলে যান। এখানে চিকিৎসা করালে টাকা দেবে কে?

এরপর বাঙলা কলেজছাত্র সোলায়মান নিজে টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে উভয়পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। প্রায় মিনিট দশেক বাগবিতণ্ডা শেষে ড্রেসিং করে ৪০০ টাকা বিল করে ডেল্টা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে রিকশাচালক জামাল রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ছাড়া যাত্রী সোলায়মানের বুকে চাপ লাগায় এক মাসের বেড রেস্ট দিয়েছেন ডাক্তার।

জানতে চাইলে বাঙলা কলেজছাত্র সোলায়মান বলেন, ‘আমি নিজে টাকা দেব বলার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা করায়নি। উল্টো আমার যাচ্ছেতাই ব্যবহার করেছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। একটা হাসপাতালের ডাক্তার কীভাবে বলেন, এখানে রিকশাচালকদের চিকিৎসা হয় না?’

জানতে চাইলে ডেল্টা হাসপাতালের সহকারী ম্যানেজার টুটুল বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। আপনারা হাসপাতালে এসে কথা বলেন। একটা ঘটনা ঘটে গেছে, এটা তো সমাধান করতে হবে। আপনারা আসেন।’

দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল বলেন, ‘গাড়ি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আহত রোগীদের চিকিৎসা চলছে। এখনও মামলা হয়নি। আহত রোগীরা এসে মামলা করলে আমরা পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

নয়াশতাব্দী/এমটি